আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী
ছাত্রশিবিরের শোডাউনে ছাত্রলীগ ফিল্মি স্টাইলে গুলিবর্ষণ করেছে। এতে শিবির
সেক্রেটারিসহ অন্তত পাঁচ কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে
ছাত্রলীগের হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, সাংবাদিক,
পুলিশ, সাধারণ শিক্ষার্থীসহ শিবির ও ছাত্রলীগের ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ নেতাকর্মীদের অবস্থা গুরুতর। এরা হলো শিবিরের সাধারণ
সম্পাদক সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া, ফোকলোর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও শিবির কর্মী
জাহাঙ্গীর, ইসলামিক স্টাডিজ মাস্টার্সের শরীফ এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের
আরিফ। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালসহ নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে ক্যাম্পাসে শিবির ও ছাত্রলীগের শোডাউনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে সংঘর্ষ শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসসহ আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুরো এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে সংঘর্ষের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা বিভিন্ন আবাসিক হল ও ভবনে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন শিবির কর্মীকে হাসুয়া, রামদা, কিরিচ, চায়নিজ কুড়াল, রড, হকিস্টিক ও লাঠিসোটা দিয়ে ব্যাপক মারধর করে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে রবীন্দ্র ভবনের সামনে ছাত্রশিবিরের ৩০-৩৫ নেতকর্মী জড়ো হয়। একই সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই ভবনের ভেতরে অবস্থান নেয়। শিবির নেতাকর্মীরা স্থান ত্যাগ করতে চাইলে ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি আখেরুজ্জামান তাকিম, সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিন (বহিষ্কৃত), মিঠু, আমিন, নিয়ন, আতিক, সবুজ সারওয়ারের নেতৃত্বে ৪০-৬৫ জন কর্মী শিবির কর্মীদের ধাওয়া করে। এ পর্যায়ে শিবির কর্মীরা দৌড়ে শহীদুল্লাহ ভবনের সামনে অবস্থান নেয়া শিবিরের অপর গ্রুপের সঙ্গে মিশে পাল্টা অবস্থান নেয়। শুরু হয় উভয় গ্রুপের মাঝে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা তুহিন, তাকিম, আতিক পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে শিবির কর্মীদের উদ্দেশে ফিল্মি স্টাইলে গুলি ছুড়তে থাকলে সংঘর্ষ রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। ছাত্রলীগের ছোড়া মুহুর্মুহু গুলিতে আহত হয় শিবিরের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন ইয়াহইয়া, শিবির কর্মী জাহাঙ্গীর, শরীফ, আরিফ এবং জহির। এ সময় ইটপাটকেল ও লাঠিসোটার আঘাতে বঙ্গবন্ধু হল শাখা শিবিরের সভাপতি মোবারক হোসেন বাবু, ইব্রাহীম হোসেন (ইসলামিক স্টাডিজ চতুর্থ বর্ষ), রবিউল ইসলাম (ভাষা দ্বিতীয় বর্ষ), আল আমিন (ইসলামের ইতিহাস দ্বিতীয় বর্ষ), ছাত্রলীগের আখেরুজ্জামান তাকিম, মামুন, তানিম, ইনকিলাব প্রতিনিধি আজিবুল হক পার্থসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে জহির, রবিউল ও আল আমিনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ক্যাম্পাসে শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে তারা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের আক্রমণে শিবির কর্মীরা পিছু হটে এবং ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান নেয়।
এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবন ও হলে অভিযান চালিয়ে শিবির সন্দেহে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করে। শুধু তা-ই নয়, ছাত্রলীগের হামলার সময় পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহযোগিতা না করায় তারা পুলিশের ওপরও চড়াও হয়। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে মারধর করে তারা। ক্যাম্পাসে শিবির কর্মীদের প্রবেশের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং ভিসির বাসভবনের গেট, প্রশাসন ভবন, জনসংযোগ দফতর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, দোকানপাট, ক্যাম্পাসের বাস এবং পুলিশের গাড়ি ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহনের একটি বাসে ভাংচুর চালায় তারা। এতে বাধা দিলে রাবি প্রক্টর চৌধুরী মোহাম্মাদ জাকারিয়াসহ কয়েকজন সহকারী প্রক্টরকে চড়-থাপ্পড়সহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। লাঞ্ছিত হয়ে প্রক্টর ভিসি ভবনে অবস্থান নিলে ছাত্র উপদেষ্টা গোলাম সাব্বির ক্যাম্পাসে পরিবেশ শান্ত করতে চেষ্টা চালান।
এদিকে বিভিন্ন ভবনে সাধারণ ছাত্রদের ওপর হামলার সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা তর্কাতর্কির একপর্যায়ে নিজেদের দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু করে। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মুন সমর্থিত কর্মী রনি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমানকে গালাগাল করলে নোমান ও হিমুর নেতৃত্বে ১২-১৫ জন রনিকে ধাওয়া দেয়। এতে সংঘর্ষ ভিন্ন মাত্রায় রূপ নেয়। পরে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের হস্তক্ষেপে পরিবেশ শান্ত হয়। এর পর উভয় গ্রুপ একত্রিত হয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবশে করে।
ঘটনার সময় বিভিন্ন ভবন থেকে ছাত্রলীগ কর্মীরা শিবির কর্মীদের লাঠিসোটা, চাইনিজ কুড়াল ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাস ফাঁকা হলে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা বিভিন্ন আবাসিক হল ও ভবনে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন শিবির কর্মীকে ব্যাপক মারধর করে। বঙ্গবন্ধু হলের ২০৩ নম্বর কক্ষের এক শিবির কর্মীকে ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত সালামের ২৩০ নম্বর কক্ষে নিয়ে ব্যাপক মারধর করে। এতে সে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাস ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন মেসে অভিযান চালিয়ে অর্ধশতাধিক শিবির কর্মীকে আটক করে পুলিশ।
ছাত্রলীগের সভাপতি আহম্মেদ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সাধারণ সম্পাদক আবু হোসাইন বিপু সাংবাদিকদের বলেন, শিবির প্রশাসনের মদতে ভর্তিপরীক্ষা বানচাল করার জন্য বহিরাগত ও খুনের আসামিদের নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। আমরা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাই।
শিবির সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন বলেন, শিবির নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণভাবে ক্লাস ও ক্যাম্পাসে অবস্থান শেষে ফিরে আসার পথে ছাত্রলীগ কর্মীরা পেছন থেকে অতর্কিত হামলা চালায়। ক্যাম্পাসে এত পুলিশের সামনে নিরস্ত্র শিবির কর্মীদের লক্ষ্য করে অন্তত ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড গুলি ছুড়ে ক্যাম্পাসে এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। এতে আমাদের সেক্রেটারিসহ ৫ নেতাকে গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। আমরা অবিলম্বে এ হামলার সুষ্ঠু ও অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ ক্যাডারদের গ্রেফতার করে ক্যাম্পাসে সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থানের পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানাই। তা না হলে ক্যাম্পাসে এর চেয়ে আরও বড় কোনো ঘটনা ঘটলে তার জন্য প্রশাসনকেই দায়ী থাকতে হবে।
এ ব্যাপারে ছাত্র উপদেষ্টা ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু বলেন, আমরা বড় একটি পরীক্ষা (অ্যাডমিশন টেস্ট) সামনে থাকায় দুই সংগঠনের ছাত্রনেতাদের সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে উভয় নেতার সঙ্গে বসতে পারি। তবে আমরা যে কোনো মূল্যে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে চাই। এজন্য ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে নগর পুলিশে অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুজ্জামান বলেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়কে অশান্ত করতে চায়, তাদের বরদাশত করা হবে না। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গতকাল সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে ক্যাম্পাসে শিবির ও ছাত্রলীগের শোডাউনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে সংঘর্ষ শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসসহ আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুরো এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে সংঘর্ষের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা বিভিন্ন আবাসিক হল ও ভবনে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন শিবির কর্মীকে হাসুয়া, রামদা, কিরিচ, চায়নিজ কুড়াল, রড, হকিস্টিক ও লাঠিসোটা দিয়ে ব্যাপক মারধর করে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে রবীন্দ্র ভবনের সামনে ছাত্রশিবিরের ৩০-৩৫ নেতকর্মী জড়ো হয়। একই সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই ভবনের ভেতরে অবস্থান নেয়। শিবির নেতাকর্মীরা স্থান ত্যাগ করতে চাইলে ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি আখেরুজ্জামান তাকিম, সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিন (বহিষ্কৃত), মিঠু, আমিন, নিয়ন, আতিক, সবুজ সারওয়ারের নেতৃত্বে ৪০-৬৫ জন কর্মী শিবির কর্মীদের ধাওয়া করে। এ পর্যায়ে শিবির কর্মীরা দৌড়ে শহীদুল্লাহ ভবনের সামনে অবস্থান নেয়া শিবিরের অপর গ্রুপের সঙ্গে মিশে পাল্টা অবস্থান নেয়। শুরু হয় উভয় গ্রুপের মাঝে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা তুহিন, তাকিম, আতিক পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে শিবির কর্মীদের উদ্দেশে ফিল্মি স্টাইলে গুলি ছুড়তে থাকলে সংঘর্ষ রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। ছাত্রলীগের ছোড়া মুহুর্মুহু গুলিতে আহত হয় শিবিরের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন ইয়াহইয়া, শিবির কর্মী জাহাঙ্গীর, শরীফ, আরিফ এবং জহির। এ সময় ইটপাটকেল ও লাঠিসোটার আঘাতে বঙ্গবন্ধু হল শাখা শিবিরের সভাপতি মোবারক হোসেন বাবু, ইব্রাহীম হোসেন (ইসলামিক স্টাডিজ চতুর্থ বর্ষ), রবিউল ইসলাম (ভাষা দ্বিতীয় বর্ষ), আল আমিন (ইসলামের ইতিহাস দ্বিতীয় বর্ষ), ছাত্রলীগের আখেরুজ্জামান তাকিম, মামুন, তানিম, ইনকিলাব প্রতিনিধি আজিবুল হক পার্থসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে জহির, রবিউল ও আল আমিনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ক্যাম্পাসে শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে তারা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের আক্রমণে শিবির কর্মীরা পিছু হটে এবং ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান নেয়।
এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবন ও হলে অভিযান চালিয়ে শিবির সন্দেহে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করে। শুধু তা-ই নয়, ছাত্রলীগের হামলার সময় পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহযোগিতা না করায় তারা পুলিশের ওপরও চড়াও হয়। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে মারধর করে তারা। ক্যাম্পাসে শিবির কর্মীদের প্রবেশের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং ভিসির বাসভবনের গেট, প্রশাসন ভবন, জনসংযোগ দফতর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, দোকানপাট, ক্যাম্পাসের বাস এবং পুলিশের গাড়ি ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহনের একটি বাসে ভাংচুর চালায় তারা। এতে বাধা দিলে রাবি প্রক্টর চৌধুরী মোহাম্মাদ জাকারিয়াসহ কয়েকজন সহকারী প্রক্টরকে চড়-থাপ্পড়সহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। লাঞ্ছিত হয়ে প্রক্টর ভিসি ভবনে অবস্থান নিলে ছাত্র উপদেষ্টা গোলাম সাব্বির ক্যাম্পাসে পরিবেশ শান্ত করতে চেষ্টা চালান।
এদিকে বিভিন্ন ভবনে সাধারণ ছাত্রদের ওপর হামলার সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা তর্কাতর্কির একপর্যায়ে নিজেদের দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু করে। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মুন সমর্থিত কর্মী রনি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমানকে গালাগাল করলে নোমান ও হিমুর নেতৃত্বে ১২-১৫ জন রনিকে ধাওয়া দেয়। এতে সংঘর্ষ ভিন্ন মাত্রায় রূপ নেয়। পরে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের হস্তক্ষেপে পরিবেশ শান্ত হয়। এর পর উভয় গ্রুপ একত্রিত হয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবশে করে।
ঘটনার সময় বিভিন্ন ভবন থেকে ছাত্রলীগ কর্মীরা শিবির কর্মীদের লাঠিসোটা, চাইনিজ কুড়াল ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাস ফাঁকা হলে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা বিভিন্ন আবাসিক হল ও ভবনে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন শিবির কর্মীকে ব্যাপক মারধর করে। বঙ্গবন্ধু হলের ২০৩ নম্বর কক্ষের এক শিবির কর্মীকে ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত সালামের ২৩০ নম্বর কক্ষে নিয়ে ব্যাপক মারধর করে। এতে সে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাস ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন মেসে অভিযান চালিয়ে অর্ধশতাধিক শিবির কর্মীকে আটক করে পুলিশ।
ছাত্রলীগের সভাপতি আহম্মেদ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সাধারণ সম্পাদক আবু হোসাইন বিপু সাংবাদিকদের বলেন, শিবির প্রশাসনের মদতে ভর্তিপরীক্ষা বানচাল করার জন্য বহিরাগত ও খুনের আসামিদের নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। আমরা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাই।
শিবির সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন বলেন, শিবির নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণভাবে ক্লাস ও ক্যাম্পাসে অবস্থান শেষে ফিরে আসার পথে ছাত্রলীগ কর্মীরা পেছন থেকে অতর্কিত হামলা চালায়। ক্যাম্পাসে এত পুলিশের সামনে নিরস্ত্র শিবির কর্মীদের লক্ষ্য করে অন্তত ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড গুলি ছুড়ে ক্যাম্পাসে এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। এতে আমাদের সেক্রেটারিসহ ৫ নেতাকে গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। আমরা অবিলম্বে এ হামলার সুষ্ঠু ও অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ ক্যাডারদের গ্রেফতার করে ক্যাম্পাসে সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থানের পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানাই। তা না হলে ক্যাম্পাসে এর চেয়ে আরও বড় কোনো ঘটনা ঘটলে তার জন্য প্রশাসনকেই দায়ী থাকতে হবে।
এ ব্যাপারে ছাত্র উপদেষ্টা ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু বলেন, আমরা বড় একটি পরীক্ষা (অ্যাডমিশন টেস্ট) সামনে থাকায় দুই সংগঠনের ছাত্রনেতাদের সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে উভয় নেতার সঙ্গে বসতে পারি। তবে আমরা যে কোনো মূল্যে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে চাই। এজন্য ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে নগর পুলিশে অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুজ্জামান বলেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়কে অশান্ত করতে চায়, তাদের বরদাশত করা হবে না। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।