সূত্র জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার তালিকায় সরকারের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ব্যক্তিও রয়েছে। যারা তানভিরকে নিয়ম ভেঙে বিপুল পরিমাণ ঋণ পাইয়ে দিয়ে বিশাল অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। তবে ওই তালিকায় সরকারের উপদেষ্টা পর্যায়ের কেউ নেই বলে নিশ্চিত করেছে সূত্র। এ পেক্ষাপটে দেশের প্রধান বিমানবন্দর হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে গমনকারী সকল সিআইপি’র উপর নজর রাখতে শুরু করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। হল মার্ক এমডি তানভীর মাহমুদের সিআইপি (গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ব্যক্তি) মর্যাদা বাতিল করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আগামী রোববার এ সংক্রান্ত পত্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হতে পারে।
ওদিকে তানভীর মাহমুদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি সংসদে জোরালোভাবে ওঠার পর এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে আলোচনা হয় তানভীর মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে কোন প্রতিবন্ধকতা আছে কি না। আলোচনা হয় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হলে সরকারের ঘনিষ্ঠ কারো বিপদে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে কি না। আলোচনায় উপস্থিত বেশির ভাগ পুলিশ কর্মকর্তা তানভীরের বিরুদ্ধে অবিলম্বে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন। তবে কয়েকজন কর্মকর্তা ধীরে চল নীতি অনুসরণের পরামর্শ দেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কৌশল নির্ধারণের জন্য মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, তানভীরের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা (সাবেক শেরাটন) শাখার পক্ষ থেকেই মামলা দায়ের হলে ভাল হয় বলে পুলিশ সদর দপ্তরকে জানানো হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরকে মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, তানভীর এখন তাদের তীক্ষ্ন নজরদারির মধ্যে রয়েছেন। গ্রীন সিগন্যাল পাওয়া মাত্র তাকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া সম্ভব হবে।
যোগাযোগ করা হলে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) এসএস ইমিগ্রেশন এএজেডএম নাফিউল ইসলাম তানভীরের বহির্গমনের উপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল মানবজমিনকে বলেন, তানভীর মাহমুদের বিদেশ গমনের উপর নিষেধাজ্ঞা আছে। আমরা সতর্ক আছি। দেশের সবগুলো বহির্গমন পয়েন্টেই এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ভূঁইফোড় প্রতিষ্ঠান হলমার্ক গ্রুপ সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে ২ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। ২০১০ সালে এ ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধান প্রতিবেদনও দেয়। গত জুন মাসে বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে এলো দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। দেশের বেশির ভাগ অর্থ বিশেষজ্ঞ বলছেন, হলমার্ক কেলেঙ্কারি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আর্থিক জালিয়াতির ঘটনা।