0 প্রধানমন্ত্রীকে বহাল রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: আকবর আলি


ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীকে বহাল রেখে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্ববাধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান।

তিনি বলেন, “চলমান সংবিধান কাঠামোতে প্রধানমন্ত্রীকে বহাল রেখে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সরকার যদি নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে চলমান অচল‍াবস্থা নিরসন না করে, তাহলে আগামী নির্বাচন অনিশ্চয়তায় পড়বে।”

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড পিস স্টাডিজ (সিএসপিএস) আয়োজিত ‘দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা: উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদল নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করার যে প্রস্তাব দিয়েছেন, সেখানে সমস্যা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে এমন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যেখানে দশজন মন্ত্রীর সিদ্ধান্ত এক কথায় নাকচ করে দিতে পারেন। এ অবস্থায় সংসদ বা প্রধানমন্ত্রীকে বহাল রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।”

সংসদ বহাল রেখে নির্বাচনের অসুবিধার কথাগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, “সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে সরকারি দল যদি ১০ ভাগ আসন পায়, তাহলে তারা সংসদ অধিবেশন ডেকে নির্বাচনে ব্যাপক কারসাজির অভিযোগ তুলে তা বাতিল করে দেবে। তাই সংসদ বহাল রেখে সুষ্ঠু কোনো নির্বাচন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।”

তিনি বলেন, “বিভিন্ন সময় নানা পরিস্থিতিতে সংবিধানকে এমন কাটাছেঁড়া করা হয়েছে যে সেখানে নানা অসঙ্গতি রয়ে গেছে। তত্ত্ববধায়ক সরকার বা অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান কে হবেন এটা যদি আগে থেকেই ঠিক করা থাকে, তাহলে সমস্যা তৈরি হয়। যেটা হয়েছিল ২০০৬ সালে নির্বাচনে।”

আকবর আলি বলেন, “অবসর নেওয়া পাচঁজন প্রধান বিচারপতির মধ্যে থেকে একটি কমিটি গঠন করা হবে, যারা প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করবেন। যাকে নিয়োগ দেওয়া হবে তাকে ৫-৭ দিন আগে জানানো হবে। অথবা লটারি দিয়ে এদের মধ্যে থেকে একজনকে নিয়োগ করা যেতে পারে। এটা করতে গেলেও সংবিধান সংশোধন করতে হবে।”

তিনি বলেন, “গত চল্লিশ বছরে অসাংবিধানিক সরকার খুব বেশি দিন থাকতে পারেনি। আগামী চল্লিশ বছরেও পারবে না। এই জায়গায় আমি আশাবাদী আগামী নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একটা সমাধানে পৌঁছাতে পারবে।”

সাবেক সচিব আব্দুল হান্নানের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরো অংশ নেন সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক সচিব এসএম জহরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুকুমার বড়ুয়া, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফেরদৌস আক্তার ওয়াহিদা এমপি, দৈনিক নিউ নেশনের সম্পাদক মোস্তাফা কামাল মজুমদার, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল প্রমুখ।

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তারেক শামছুর রেহমান।

তিনি বলেন, “এখন একটি ‘নির্দলীয় সরকার’ কীভাবে গঠিত হবে, সে ব্যাপারে ছয়টি ‘বিকল্প’ নিয়ে এই মুহূর্তে আলোচনা হতে পারে।

এগুলো হলো—
বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩ মাস আগে মহাজোট সরকার পদত্যাগ করবে ও একটি নির্দলীয় সরকার শুধু ৩ মাসের জন্য দায়িত্ব নেবে।

একটি ‘এলডার্স কাউন্সিল’ নির্দলীয় সরকারের দায়িত্ব নেবে, যারা শুধু নির্বাচন পরিচালনা করবে।

একজন সাবেক প্রধান বিচারপতির (অথবা একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তির) নেতৃত্বে সংবিধানিক পদের অধিকারীদের নিয়ে একটি সরকার।

স্পিকারের নেতৃত্বে দু’টি বড় দলের সমসংখ্যক সদস্যদের (০৫ জন করে) নিয়ে একটি সরকার। তবে কথা থাকে, স্পিকার অথবা সদস্যরা কেউই আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।

যৌথ নেতৃত্বে (একজন বিএনপি, একজন আওয়ামী লীগ মনোনীত) একটি নির্দলীয় সরকার, যাদের কেউই নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না।

সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে একটি সরকার। 
 

BANGLADESHI UPDATE NEWS Copyright © 2011 - |- Template created by O Pregador - |- Powered by Blogger Templates