0 সংসদে হাতাহাতির উপক্রম

প্রায় এক বছর পর বিরোধী দল গতকাল সংসদে ফিরলে সংসদ প্রথমে প্রাণবন্ত হয়ে উঠলেও পরে চরম উত্তপ্ত হয়ে হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছে যায়। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনাকালে বিরোধীদলীয় নেতা থাকাকালে ‘শেখ হাসিনা গোলাম আযমের পা ছুঁয়ে সালাম করেছিলেন’ মর্মে বিরোধী দলের এক মহিলা এমপির বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সংসদে চরম উত্তেজনা ও হইচইয়ের সৃষ্টি হয়। সরকারি ও বিরোধী দলের মহিলা এমপিদের মারমুখো ভূমিকার কারণে হাতাহাতির উপক্রম হয়। সরকারি দলের এক এমপি ‘চুপ থাপ্পড় মারব’ ধরনের কথা বললে বিরোধী দলের একজন সদস্যও অনুরূপ অঙ্গভঙ্গি করে জবাব দেন। পরে সংসদে অশালীন বক্তব্যের অভিযোগ এনে জাসদের মইন উদ্দিন খান বিরোধীদলীয় সদস্য ও বিরোধীদলীয় নেত্রী সম্পর্কে মন্তব্য করলে পাল্টা জবাব দেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। তার পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে সরকারি দলের চিফ হুইপ আব্দুস শহীদ সব অশালীন বক্তব্য একপাঞ্জ করার দাবি জানান।
গতকাল বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে স্পিকার আব্দুল হামিদ অ্যাডভোকেটের সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হলে ৫টা ১৩ মিনিটে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিরোধী দলের সদস্যরা সংসদে যোগ দেন। টানা ৭৭ কার্যদিবস সংসদ বর্জনের পর তারা সংসদে যোগ দিলেন। এর আগে গতকাল বিকেলে সংসদীয় দলের সভায় বিরোধী দল সংসদে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। বিরোধী দল সংসদে ফেরায় শুরুতে স্পিকার তাদের শুভেচ্ছা ধন্যবাদ জানান এবং বিরোধী দল সংসদের কার্যক্রম চলা পর্যন্ত সংসদে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিকেলে সংসদ শুরুর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া প্রায় একই সময়ে হাউজে প্রবেশ করেন এবং নিজ নিজ আসন গ্রহণ করেন। সংসদে সরকারি ও বিরোধীদলীয় এমপিদের মারমুখো অবস'ান ও অশালীন বাক্য প্রয়োগ এবং হাতাহাতির উপক্রম হওয়ার সময় দুইজনই সংসদে উপসি'ত ছিলেন। অবশ্য মাগরিবের বিরতির পর পয়েন্ট অব অর্ডারে বিতর্কের সময় প্রধানমন্ত্রী সংসদে থাকলেও বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন না।
বিকেলে বিরোধী দলের উপসি'তিতে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা শুরু হয় সরকারি দলের হুইপ আ স ম ফিরোজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। এরপর বিএনপির শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও রেহানা আক্তার রানু বক্তব্য রাখেন। রানুর বক্তব্যে চরম উত্তেজনা ও হট্টগোলের পর বৈঠক মাগরিবের নামাজের জন্য বিরতি দেয়া হয়। বিরতির পর আবার বৈঠক শুরু হলে স্পিকার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা সমাপ্তির ঘোষণা দিয়ে পরপরাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে ৩০০ বিধিতে এক বিবৃতি দেয়ার জন্য আহ্বান করতে যাচ্ছিলেন। তখনই জাসদের মইন উদ্দিন খান বাদল পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর চাইলে স্পিকার তাকে ফ্লোর দেন। তিনি রেহানা আক্তার রানুর বক্তব্যকে অশালীন ও অসংসদীয় আখ্যায়িত করে জেনেশুনে সংসদে আসার জন্য বিরোধী দলের সদস্যদের অনুরোধ করে বক্তব্য রাখলে সংসদ আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তখন পাল্টা জবাব দিতে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর চান বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি মইন উদ্দিনের বক্তব্যের জবাব দিতে দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর পক্ষ নিয়ে কথা বলায় বাদলের কড়া সমালোচনা করেন। এ ছাড়া তিনি সৌদি কূটনীতিক হত্যা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সৌদি আরব যাওয়ার ভিসা না পাওয়ায় সরকার ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেন। অবশ্য পরে বিবৃতি দিতে দাঁড়িয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে নিষিদ্ধ পল্লীর ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে মর্মে মন্তব্য করে তার ব্যাপারে দেয়া বক্তব্যে হতাশা ব্যক্ত করেন।
আসম ফিরোজ রাষ্ট্রপতির ভাষণের আলোচনায় বলেন, একটি কুচক্রী মহল বারবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলে আসছে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলে ক্ষমতা অন্যের হাতে তুলে দিতে চায়। তিনি বলেন, বিএনপিকে জামায়াত ও মৌলবাদ যেভাবে আঁকড়ে ধরেছে তাতে বিএনপির অস্তিত্বের টানাপড়েন শুরু হয়ে গেছে।
বিএনপির শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, বিরোধী দল সরকারের পার্ট। কিন' সে রকম আচরণ আমরা পাইনি। সাগর-রুনির বিষয়ে চেয়ারে বসে বলতে পারি বেডরুম পাহারা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের না। কিন' মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের। তারা এ দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ১২ মার্চ গণতান্ত্রিক কর্মসূচি দিয়েছিলাম। সেদিন কী কারণে লঞ্চ-ট্রেন বন্ধ করে দেয়া হলো, চিঠি দিয়ে সবাইকে হোটেলে ওঠা বন্ধ করে দেয়া হলো। মালিকদের ডেকে বাস বন্ধ করে দেয়া হলো। বিরোধীদলীয় নেত্রী তো ১৭৩ দিন হরতাল দেননি।
এ্যানি বলেন, তারা সব প্রশাসনযন্ত্র ব্যবহার করেছেন। কিন' ঢাকা চলো কর্মসূচি থামিয়ে দিতে পারেননি। আমাদের নেত্রী চাইলে ১৩-১৪ মার্চ হরতাল দিতে পারতেন। কিন' দেননি। তারা মহাসমাবেশকে ভয় পান, জনগণকে ভয় পান। কারণ গত তিন বছরে তারা জনগণকে কিছুই দিতে পারেননি। তাদের শরিকরাই বলেছেন, সেনাবাহিনীর সহায়তা ছাড়া ক্ষমতায় আসতে পারতাম না। তাদের লোকই বলেছেন, মন্ত্রিসভায় ডিজিএফআইর সদস্য রয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা মইন-ফখরুদ্দীনকে চ্যালেঞ্জ করে পার্লামেন্টে এসেছি। আইএসআইর সাবেক প্রধান দুররানী আদালতে যে হলফনামা দিয়েছেন, সেখানে বাংলাদেশ বা বিএনপির নাম উল্লেখ নেই। আজ পর্যন- পাকিস-ানের কোনো পত্রিকায় এ ধরনের কোনো তথ্য প্রকাশ হয়নি। আমাদের নেতা মওদুদ সাহেব বই লিখেছিলেন। সেখানে উল্লেখ আছে লংড্রাইভের কাহিনী ও কত টাকা কে নিয়েছেন। পাঁচ কোটি রুপি কি অনেক টাকা যে এটা পাকিস-ান থেকে বিএনপির নিতে হবে। আওয়ামী লীগ ’৯৬ সালে বিদেশ থেকে টাকা এনেছিল। এ নিয়ে একটি তদন- কমিটি গঠন করতে হবে।
এরপর রেহানা আক্তার রানু বলেন, দিনবদলের কথা বলে এ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। সরকারের হানিমুন পিরিয়ড অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। মানুষ বলছে, নৌকার নাকি তলায় ফুটা হয়ে গেছে। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি দেশের মানুষকে পথে বসিয়েছে। ফেনী নদীর পানি নিয়ে যাচ্ছে ভারত। সরকার প্রশাসন সবাই তখন নিশ্চুপ।
রানু বলেন, ’৯১ সালে গোলাম আযমের পা ছুঁয়ে সালাম করেছিলেন শেখ হাসিনা। আবার ’৯৬ সালে কেয়ারটেকার আন্দোলনের সময় জামায়াতের সাথে একত্রে আন্দোলন করেছেন। জামায়াত যখন তাদের সাথে থাকে তখন সঙ্গী, যখন আমাদের সাথে থাকে তখন তারা জঙ্গি। তার এ বক্তব্যের পর সংসদে উত্তেজনা দেখা দেয়। সরকারি দলের সদস্যরা একযোগে হইচই শুরু করেন। রেহানা আক্তার রানুর অদূরে বসা সরকারি দলের ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পী দাঁড়িয়ে বলেন, চুপ। তখন তার সামনের সারিতে বসা বিএনপির শাম্মী আখতার ও সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া দাঁড়িয়ে এর প্রতিবাদ করতে গেলে তা বাপ্পীর সাথে হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়। একপর্যায়ে বাপ্পী হাত উঠিয়ে বলেন, চুপ, থাপ্পড় মারব। শাম্মী আখতারও পাল্টা ইঙ্গিত করেন। এ সময় আরো হইচই শুরু হয়। এ সময় স্টাফরা ছুটে এসে দুইজনের মাঝখানে অবস'ান নেন। তখন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও সরকারি দলের চিফ হুইপসহ কয়েকজন সদস্য এগিয়ে আসেন। এ সময় স্পিকার বলেন, আগে শুনুন। তখন রেহানা আক্তার রানু বলেন, সংসদে এসেছি কথা বলার জন্য। কথা বলতে না দিলে ওয়াকআউট করতে বাধ্য হবো। এরই মধ্যে রানু তার বক্তব্য অব্যাহত রাখলে পরিসি'তি কিছুটা শান্ত হয়।
রানু বলেন, দেশ কালনাগিণীর কবলে পড়েছে। দেশে জংলি শাসন চলছে। আমরা দলনের শাসন নয়, মননের শাসন চাই। এ সরকার আদালতকে দিয়ে তাদের সব অপকর্ম জায়েজ করে নিতে চায়।
তিনি সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক ও বর্তমান একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ আনেন ও কিছু মন্তব্য করে বলেন, ঝাঁটা দিয়ে পিটিয়ে ভূত তাড়ানো উচিত। তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান রক্ষীবাহিনী দিয়ে বিরোধী দলকে মেরেছিলেন। আর তার কন্যা এখন ছাত্রলীগকে নিয়ে বিরোধী দল বিএনপিকে শেষ করতে চাচ্ছেন। তিনি সাগর-রুনি হত্যাকা ও সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খুনের ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, সেই ৪৮ ঘণ্টা আর শেষ হয় না। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভেটকি হাসি দেখলে শিশুরা ভয় পায়। আজকের প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসীদের লালনকারী। তিনি সন্ত্রাসীদের গডমাদার।
তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও আইন প্রতিমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, এমন সময় আসবে জনগণ আপনাদের পেছনের কাপড় তুলে পেটাবে। তখন কাপড় রেখে পালিয়ে পার পাবেন না। তিনি বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের সূর্যসন্তান। তার নাম শুনলে তাদের গায়ে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। মৃগী রোগীর মতো তাদের চটপটানি দেখা দেয়। তারেককে এত ভয় কেন। যদি প্রশ্ন করা হয় শহীদ জিয়া, বেগম জিয়ার পর কে? সবাই একবাক্যে বলবেন তারেক জিয়া। আবার যদি বলা হয়, শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার পর কে? এ প্রশ্নের উত্তর কেউ বলতে পারবেন না। এজন্যই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাজানো চার্জশিট দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী বেগম জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তান চলে যেতে বলেন। কিন' মানুষ বলে, ‘চশমা ওয়ালা বুবুজান নৌকা নিয়ে ভারত যান।’ তিনি বলেন, গানে বলে তু তু তু তরা, মর্জিনার মা মার্কা মারা। আর মানুষ বলে, তু তু তু তরা, শেখ হাসিনার মুখ মার্কা মারা। তিনি বলেন, দলের অধীন নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসার দিবাস্বপ্ন দেখছে। কিন' সে স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। দলীয় সরকারের অধীন কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। তা করতেও দেবে না। রানু বক্তব্য শেষ করলে স্পিকার বলেন, সব কটূক্তিমূলক বক্তব্য একপাঞ্জ করা হলো। এর পরই মাগরিবের বিরতি দেয়া হয়।
মাগরিবের বিরতি পর পয়েন্ট অব অর্ডারে মাইনউদ্দিন খান বাদল বলেন, এখানে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে তা ন্যূনতম শালীনতা অতিক্রম করেছে। এটা একটা বাজে উদাহরণ সৃষ্টি করবে। প্রধানমন্ত্রী একজন বয়স্কা মহিলা। তাকে উদ্দেশ করে ‘মইন ইউ আহমেদের কোলে না অন্য কারো কোলে বসেছিলেন তা বাংলাদেশের মানুষ জানে’, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভেটকি হাসিতে শিশুরা ভয় পায়’, ‘ঝাঁটা দিয়ে ভূত তাড়ানোর’ কথা বলেছেন, বিচারকদের সম্পর্কে যে ভাষায় বলেছেন এগুলো উদাহরণ হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, কাপড় ছাড়া দেশ ছাড়া করবে। মানুষ কাউকে এই অবস'ায় দেখতে চায় না। ভারতীয় মহিলা পুলিশ দিয়ে উলঙ্গ করে পেটাবে। পার্লামেন্টে এ কটাক্ষগুলো কিভাবে হয়। তিনি কার্যপ্রণালী বিধি পড়ে বিরোধীদলীয় সদস্যদের সংসদে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কথা বলতে বলতে এমন জায়গায় চলে যাচ্ছেন, তাদের বোঝা উচিত সংসদে কতটুকু কথা বলা যাবে। এরপর তিনি কার্যপ্রণালী বিধির অংশবিশেষ পড়ে শুনান।
এর জবাবে জয়নুল আবদিন ফারুক ফ্লোর নিয়ে বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি থেকে শহীদ জিয়া, তারেক জিয়া ও খালেদা জিয়া নিয়ে অশালীন বক্তব্য দিয়ে আসছেন। কিন' এসব ব্যাপারে মইন উদ্দিন খান বাদল কোনো কথা বলেননি। তিনি স্পিকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ডান দিক থেকে অশালীন বক্তব্য বন্ধ হলে বাম দিকেও বন্ধ হবে। তিনি মইন উদ্দিন খান বাদল প্রসঙ্গে আবার বলেন, আপনি নবীন সদস্য। আপনার ইতিহাস বলতে চাই না। জাতি আপনার ইতিহাস জানে। উনি আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইন প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে বললেন। জিয়াউর রহমান ও তারেককে নিয়ে যখন অশালীন কথা বলা হয়েছে তখন আপনি কোথায় ছিলেন। তিনি সীমান্তে হত্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, ফালানীর লাশ ঝোলা ও বাবরকে লেংটা করার পর যখন আমাদের সংসদের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এগুলো চলতেই থাকবে। আমরা এর প্রতিবাদ করবই।
তিনি বলেন, যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারেন না, আর আমাদের সমাবেশ বন্ধ করে দেন তার পদত্যাগ করা উচিত। তিনি বলেন, এখানে শিখতে আসিনি। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, আপনি সৌদি আরব যেতে পারলেন না। আপনি দীপুমণি নন, স্বাধীন দেশের পতাকা বহন করে সৌদি যেতে পারলেন না। আমাদের লজ্জা হয়, এ সরকারকে ঘৃণা করি। যে সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিসা পান না। সেই সরকারকে ঘৃণা করি। তিনি বলেন, প্যাকিং করে পাকিস্তান চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়। খালেদা জিয়াকে নয়, আপনাকে প্যাকিং করে ভারতে পাঠিয়ে দেয়া হবে। জনগণ প্রস'ত হয়ে গেছে।
এরপর আব্দুশ শহীদ বলেন, মইন উদ্দিন খান বাদল তিনি কোনো সদস্যের নাম উল্লেখ করেননি। ওই সদস্য যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সংসদের ভাষার মধ্যে পড়ে না। আমি চিফ হুইপ থাকাকালে একটা দিনও এক সেকেন্ড কথা বলার জন্য দেননি তখনকার স্পিকার। এখন বিরোধী দল দেশের স্বার্থ নয়, সদস্যপদ রক্ষা জন্য সংসদে যোগ দিয়ে এখন ভূতের মুখে রাম রাম। তারা কেন যোগ দিয়েছে সবাই জানে। এ জন্য ধান ভানতে শিবের গীত। তিনি বলেন, সংসদে যখন তার দলের একজন এভাবে অশালীন কথা বলেন তখন বিরোধীদলীয় নেতা তালি দেন। মনে হয় যেন সভ্য দেশে নয়, আফ্রিকার জঙ্গলে বক্তব্য শুনছি। এসব বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা দরকার। এই বিতর্কের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৩০০ বিধিতে একটি বিবৃতি দিতে দাঁড়ান। বিষয়বস' ছিল মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা মামলার রায় প্রসঙ্গে। কিন' তিনি আগের বক্তব্যের রেশ টেনে কথা বলা শুরু করেন। এ সময় স্পিকার তাকে বিবৃতি পড়ে শোনার জন্য বারবার আহ্বান জানালেও তিনি আগের প্রসঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেন।
দীপুমণি বলেন, আজকে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে সে ভাষা নিষিদ্ধপল্লীতেও এই ভাষা মানায় না। আজ তা এই সংসদে উচ্চারিত হয়েছে অবলীলাক্রমে। তিনি বলেন, আমি তিন দশক রাজনীতি করছি কিন' সংসদে প্রথম এসেছি। আমি হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছি। এখানে অশালীন বক্তব্যকে টেবিল চাপড়ে উৎসাহিত করেছেন। যারা সংসদকে দূষিত করল, জনগণকে অপমানিত করল এটা রাজনৈতিক পথ হতে পারে না। এটা ধ্বংসের পথ, মানুষ এই পথ মেনে নেবে না।
 

BANGLADESHI UPDATE NEWS Copyright © 2011 - |- Template created by O Pregador - |- Powered by Blogger Templates