0 বিএনপিকে আইএসআই’র অর্থ দেয়ার খবর মিথ্যা : পাকিস্তান মাহাবুবুর রহমান পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বিএনপিকে আইএসআই’র টাকা দেয়ার খবরটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। একইসঙ্গে আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানিও বলেছেন, এটি ভিত্তিহীন খবর। এর সঙ্গে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই। উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই অপপ্রচার করা হচ্ছে। পাকিস্তানের আদালতে আমি এ ধরনের কোনো সাক্ষ্য দিইনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা কয়েকদিন ধরে আইএসআই বিএনপিকে টাকা দিয়েছে বলে প্রচারণা চালায়। এ প্রচারণা যে একেবারেই বানোয়াট, তা পাকিস্তান সরকার বৃহস্পতিবার খোলাসা করল। আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক তার দেয়া আদালতের সাক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ ও বিএনপি’র কোনো প্রসঙ্গই ছিল না বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এ খবর সম্পূর্ণ কাল্পনিক। আমি আদালত কেন, অন্য কোথাও এ ধরনের কোনো কথা বলিনি। আমাকে কেউ এ ধরনের কথা জিজ্ঞাসাও করেনি।’ পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘বানোয়াট’ বলে প্রত্যাখ্যানও করেছে। প্রসঙ্গত, দুবাইভিত্তিক খালিজ টাইমস ৩ মার্চ আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানির উদ্ধৃতি দিয়ে ১৯৯১ সালের নির্বাচনের আগে আইএসআই বিএনপিকে পাঁচ কোটি রুপি দিয়েছে বলে একটি রিপোর্ট ছাপে। এর পরদিন ৪ মার্চ একই রিপোর্ট ঢাকার দৈনিক প্রথম আলো ছাপে। পরে ডেইলি মেইলের ভারতীয় অনলাইন সংস্করণ, সাপ্তাহিক ইন্ডিয়া টুডে এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) একই রিপোর্ট প্রকাশ করে। রিপোর্টটি একই ব্যক্তি দীপাঞ্জন রায়ের করা। ভারতীয় সাংবাদিক দীপাঞ্জন রায় ডেইলি মেইল ও ইন্ডিয়া টুডে-তে রিপোর্টটি করেন। দীপাঞ্জন রায় ঢাকার দৈনিক প্রথম আলো’র নয়াদিল্লি প্রতিনিধি। ইন্ডিয়া টুডে-তেও তিনি বাংলাদেশ বিষয়ে লেখেন। বাংলাদেশ সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন সংবাদ সংস্থা বাসস ভারতীয় সাপ্তাহিক ইন্ডিয়া টুডে’র ওই রিপোর্টটি হুবহু প্রচার করেছে। তবে এ বিষয়ে পাকিস্তানের কোনো পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি। এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশের পর বাংলাদেশের সরকারি দল আওয়ামী লীগ ব্যাপক প্রচারণা শুরু করে। দলটির প্রধান ও সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রী-এমপিরা জাতীয় সংসদ এবং রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ‘আইএসআই’র টাকা নিয়ে ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছেন বলে অভিযোগ আনেন। বিরোধী দলের বিভিন্ন দাবি ও আন্দোলনের বিপরীতে এ ইস্যুটিকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন তারা। ২০ মার্চ জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের অন্যতম জোরই ছিল এ ইস্যুর ওপর। এরই মধ্যে ২২ মার্চ বাংলা দৈনিক নয়া দিগন্ত ও ইংরেজি সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকায় আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানির সাক্ষাত্কার ছাপা হয়। পাকিস্তান থেকে মনির আহমেদ দৈনিক নয়া দিগন্ত-এ ও ঢাকা থেকে ফোনে আবদুর রহমান খান সাপ্তাহিক হলিডে’র পক্ষে সাক্ষাত্কার নেন। একইদিনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র আবদুল বাসিত ‘বিএনপিকে আইএসআইর অর্থ দেয়া’র খবরকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেন। প্রতিবেদন ভিত্তিহীন—পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর : পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনকালে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই (ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স) বিএনপিকে অর্থ দিয়েছিল বলে প্রকাশিত খবরটি বানোয়াট। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র আবদুল বাসিত এ খবরকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এ ধরনের প্রতিবেদন শুধু ভিত্তিহীনই ছিল না, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ও পারস্পরিক কল্যাণকর সম্পর্ক নষ্ট করার হীন প্রয়াস এটি। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করে থাকে এবং এ ধরনের মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও বানোয়াট কাহিনী বিশ্বাস করা ঠিক নয়।’ পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (.িসড়ভধ.মড়া.ঢ়শ) ওই মুখপাত্রের বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে। সাক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রসঙ্গই ছিল না—দুররানি : আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানি এবং পাকিস্তানের মেহরান ব্যাংকের সাবেক প্রধান ইউনুস হাবিব বিএনপিকে অর্থ দেয়ার কথা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইসলামাবাদে নয়া দিগন্তে’র সাংবাদিক মনির আহমেদকে আসাদ দুররানি এবং ঢাকা থেকে ফোনে সাপ্তাহিক হলিডে’র সাংবাদিক আবদুর রহমান খানকে ইউনুস হাবিব এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনকে অসত্য বলে অভিহিত করেন। ২২ মার্চ হলিডে পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাত্কারে দুররানি বলেন, ‘পাকিস্তান সুপ্রিমকোর্টে আমার বক্তব্যে পাকিস্তানের বাইরের কোনো দলকে অর্থ দেয়ার কথা উল্লেখ নেই।’ তিনি বলেন, পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্টে তিনি এমন কিছুই বলেননি। তবে পাকিস্তানের বাইরের কিছু গণমাধ্যমে তার বরাত দিয়ে এমন বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশের খবর জানতে পেরে তিনি ব্যথিত। বিএনপিকে অর্থ দেয়ার খবরকে দুররানি ‘মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে মনগড়া’ সংবাদ বলে মন্তব্য করেন। একইদিন ইসলামাবাদে মনির আহমেদকে দেয়া সাক্ষাত্কারে আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানি ‘বিএনপিকে টাকা দেয়া’র প্রশ্নে বলেন, ‘এ ধরনের প্রতিবেদনের কথা আমিও শুনেছি। এ খবরের মধ্যে কোনো সত্যতা নেই। এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন প্রচারণা। এর সঙ্গে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই।’ খালিজ টাইমস-এ তার ভাষ্য প্রকাশের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলছি, আমি কোথাও এমন কোনো কথা বলিনি। আর খালিজ টাইমস-এর কোনো সাংবাদিক আমার সঙ্গে কখনও যোগাযোগও করেননি। তারা কী লিখেছেন, সেটা তাদের ব্যাপার। আমাকে কিছু জিজ্ঞেস না করেই তারা এই প্রতিবেদন ছেপেছে। তাদের ওই প্রতিবেদন অসত্য। তাছাড়া খবরটি পাকিস্তান থেকেও কারও লেখা নয়। বাইরে থেকে তারা গল্প রচনা করেছেন।’ ‘এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কি-না’ জানতে চাইলে আসাদ দুররানি বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা সরকারের সঙ্গে আইএসআই’র কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়নি। আমরা তা করতে যাব কেন? উদ্দেশ্যমূলক এই অপপ্রচার করা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য এটা হতে পারে—বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করা কিংবা এর পেছনে অন্য কোনো মতলবও থাকতে পারে। আমি আবারও বলছি, আমার বক্তব্যের কোথাও বাংলাদেশের কোনো কথা নেই। আদালতে কী বক্তব্য দেয়া হয়েছে, তার রেকর্ড তো সংরক্ষিত থাকে। কোর্টে কিছু বলা হলে সেটি সব মিডিয়ায় প্রকাশ হতো।’ অসত্য প্রতিবেদন যখন রাজনৈতিক হাতিয়ার : আইএসআই’র টাকা দেয়া সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের সরকারি দল ৪ মার্চ থেকেই রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার শুরু করে। প্রতিবেদনের সত্যাসত্য যাচাই না করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে এবং সংসদের বাইরে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ২২ মার্চ আসাদ দুররানি ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করলে শেখ হাসিনা কিছুটা পিছু হটলেও তার দলের নেতাকর্মীরা এখনও মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি একধাপ এগিয়ে বলেছেন, তিনি পাকিস্তান সরকারের কাছে দুররানির এফিডেভিটের কপি চাইবেন। টাইমস অব আসাম পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের বৈদেশিক গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ বাংলাদেশের প্রথম আলো’র নয়াদিল্লি প্রতিনিধি দীপাঞ্জন রায় চৌধুরীকে ডেকে নিয়ে এই রিপোর্টটি তৈরি করতে বলে। এতে আরও বলা হয়, দীপাঞ্জনকে খালিজ টাইমস-এর ভারতীয় বংশোদ্ভূত মালিক এ কাজে প্ররোচিত করেন। মিথ্যা ওই সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পর বাংলাদেশের একটি বিশেষ পরিবারের আমেরিকা প্রবাসী সদস্য দিল্লি গিয়ে দীপাঞ্জন রায়কে ওই মিথ্যা রিপোর্টটির জন্য ধন্যবাদ জানান। এছাড়া বাংলাদেশের প্রথম আলো পত্রিকাও প্রথম পাতার সিঙ্গেল কলামে প্রথম রিপোর্টটি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, বিএনপি ১৯৯১ সালে আইএসআই’র কাছ থেকে ৫ কোটি রুপি গ্রহণ করে। প্রথম আলো ওই বানোয়াট খবরটি উদ্দেশ্যমূলকভাবেই প্রকাশ করে। এর পরই শেখ হাসিনা অপপ্রচার চালানোর একটি হাতিয়ার পেয়ে যান।

বিএনপিকে আইএসআই’র অর্থ দেয়ার খবর মিথ্যা : পাকিস্তান

মাহাবুবুর রহমান
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বিএনপিকে আইএসআই’র টাকা দেয়ার খবরটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। একইসঙ্গে আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানিও বলেছেন, এটি ভিত্তিহীন খবর। এর সঙ্গে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই। উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই অপপ্রচার করা হচ্ছে। পাকিস্তানের আদালতে আমি এ ধরনের কোনো সাক্ষ্য দিইনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা কয়েকদিন ধরে আইএসআই বিএনপিকে টাকা দিয়েছে বলে প্রচারণা চালায়। এ প্রচারণা যে একেবারেই বানোয়াট, তা পাকিস্তান সরকার বৃহস্পতিবার খোলাসা করল। আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক তার দেয়া আদালতের সাক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ ও বিএনপি’র কোনো প্রসঙ্গই ছিল না বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এ খবর সম্পূর্ণ কাল্পনিক। আমি আদালত কেন, অন্য কোথাও এ ধরনের কোনো কথা বলিনি। আমাকে কেউ এ ধরনের কথা জিজ্ঞাসাও করেনি।’ পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘বানোয়াট’ বলে প্রত্যাখ্যানও করেছে।
প্রসঙ্গত, দুবাইভিত্তিক খালিজ টাইমস ৩ মার্চ আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানির উদ্ধৃতি দিয়ে ১৯৯১ সালের নির্বাচনের আগে আইএসআই বিএনপিকে পাঁচ কোটি রুপি দিয়েছে বলে একটি রিপোর্ট ছাপে। এর পরদিন ৪ মার্চ একই রিপোর্ট ঢাকার দৈনিক প্রথম আলো ছাপে। পরে ডেইলি মেইলের ভারতীয় অনলাইন সংস্করণ, সাপ্তাহিক ইন্ডিয়া টুডে এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) একই রিপোর্ট প্রকাশ করে। রিপোর্টটি একই ব্যক্তি দীপাঞ্জন রায়ের করা।
ভারতীয় সাংবাদিক দীপাঞ্জন রায় ডেইলি মেইল ও ইন্ডিয়া টুডে-তে রিপোর্টটি করেন। দীপাঞ্জন রায় ঢাকার দৈনিক প্রথম আলো’র নয়াদিল্লি প্রতিনিধি। ইন্ডিয়া টুডে-তেও তিনি বাংলাদেশ বিষয়ে লেখেন। বাংলাদেশ সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন সংবাদ সংস্থা বাসস ভারতীয় সাপ্তাহিক ইন্ডিয়া টুডে’র ওই রিপোর্টটি হুবহু প্রচার করেছে। তবে এ বিষয়ে পাকিস্তানের কোনো পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি।
এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশের পর বাংলাদেশের সরকারি দল আওয়ামী লীগ ব্যাপক প্রচারণা শুরু করে। দলটির প্রধান ও সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রী-এমপিরা জাতীয় সংসদ এবং রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ‘আইএসআই’র টাকা নিয়ে ১৯৯১
সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছেন বলে অভিযোগ আনেন। বিরোধী দলের বিভিন্ন দাবি ও আন্দোলনের বিপরীতে এ ইস্যুটিকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন তারা। ২০ মার্চ জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের অন্যতম জোরই ছিল এ ইস্যুর ওপর।
এরই মধ্যে ২২ মার্চ বাংলা দৈনিক নয়া দিগন্ত ও ইংরেজি সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকায় আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানির সাক্ষাত্কার ছাপা হয়। পাকিস্তান থেকে মনির আহমেদ দৈনিক নয়া দিগন্ত-এ ও ঢাকা থেকে ফোনে আবদুর রহমান খান সাপ্তাহিক হলিডে’র পক্ষে সাক্ষাত্কার নেন। একইদিনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র আবদুল বাসিত ‘বিএনপিকে আইএসআইর অর্থ দেয়া’র খবরকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেন।
প্রতিবেদন ভিত্তিহীন—পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর : পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনকালে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই (ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স) বিএনপিকে অর্থ দিয়েছিল বলে প্রকাশিত খবরটি বানোয়াট। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র আবদুল বাসিত এ খবরকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এ ধরনের প্রতিবেদন শুধু ভিত্তিহীনই ছিল না, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ও পারস্পরিক কল্যাণকর সম্পর্ক নষ্ট করার হীন প্রয়াস এটি।
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করে থাকে এবং এ ধরনের মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও বানোয়াট কাহিনী বিশ্বাস করা ঠিক নয়।’ পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (.িসড়ভধ.মড়া.ঢ়শ) ওই মুখপাত্রের বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
সাক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রসঙ্গই ছিল না—দুররানি : আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানি এবং পাকিস্তানের মেহরান ব্যাংকের সাবেক প্রধান ইউনুস হাবিব বিএনপিকে অর্থ দেয়ার কথা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইসলামাবাদে নয়া দিগন্তে’র সাংবাদিক মনির আহমেদকে আসাদ দুররানি এবং ঢাকা থেকে ফোনে সাপ্তাহিক হলিডে’র সাংবাদিক আবদুর রহমান খানকে ইউনুস হাবিব এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনকে অসত্য বলে অভিহিত করেন।
২২ মার্চ হলিডে পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাত্কারে দুররানি বলেন, ‘পাকিস্তান সুপ্রিমকোর্টে আমার বক্তব্যে পাকিস্তানের বাইরের কোনো দলকে অর্থ দেয়ার কথা উল্লেখ নেই।’ তিনি বলেন, পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্টে তিনি এমন কিছুই বলেননি। তবে পাকিস্তানের বাইরের কিছু গণমাধ্যমে তার বরাত দিয়ে এমন বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশের খবর জানতে পেরে তিনি ব্যথিত। বিএনপিকে অর্থ দেয়ার খবরকে দুররানি ‘মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে মনগড়া’ সংবাদ বলে মন্তব্য করেন।
একইদিন ইসলামাবাদে মনির আহমেদকে দেয়া সাক্ষাত্কারে আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানি ‘বিএনপিকে টাকা দেয়া’র প্রশ্নে বলেন, ‘এ ধরনের প্রতিবেদনের কথা আমিও শুনেছি। এ খবরের মধ্যে কোনো সত্যতা নেই। এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন প্রচারণা। এর সঙ্গে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই।’ খালিজ টাইমস-এ তার ভাষ্য প্রকাশের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলছি, আমি কোথাও এমন কোনো কথা বলিনি। আর খালিজ টাইমস-এর কোনো সাংবাদিক আমার সঙ্গে কখনও যোগাযোগও করেননি। তারা কী লিখেছেন, সেটা তাদের ব্যাপার। আমাকে কিছু জিজ্ঞেস না করেই তারা এই প্রতিবেদন ছেপেছে। তাদের ওই প্রতিবেদন অসত্য। তাছাড়া খবরটি পাকিস্তান থেকেও কারও লেখা নয়। বাইরে থেকে তারা গল্প রচনা করেছেন।’ ‘এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কি-না’ জানতে চাইলে আসাদ দুররানি বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা সরকারের সঙ্গে আইএসআই’র কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়নি। আমরা তা করতে যাব কেন? উদ্দেশ্যমূলক এই অপপ্রচার করা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য এটা হতে পারে—বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করা কিংবা এর পেছনে অন্য কোনো মতলবও থাকতে পারে। আমি আবারও বলছি, আমার বক্তব্যের কোথাও বাংলাদেশের কোনো কথা নেই। আদালতে কী বক্তব্য দেয়া হয়েছে, তার রেকর্ড তো সংরক্ষিত থাকে। কোর্টে কিছু বলা হলে সেটি সব মিডিয়ায় প্রকাশ হতো।’
অসত্য প্রতিবেদন যখন রাজনৈতিক হাতিয়ার : আইএসআই’র টাকা দেয়া সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের সরকারি দল ৪ মার্চ থেকেই রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার শুরু করে। প্রতিবেদনের সত্যাসত্য যাচাই না করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে এবং সংসদের বাইরে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন।
সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ২২ মার্চ আসাদ দুররানি ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করলে শেখ হাসিনা কিছুটা পিছু হটলেও তার দলের নেতাকর্মীরা এখনও মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি একধাপ এগিয়ে বলেছেন, তিনি পাকিস্তান সরকারের কাছে দুররানির এফিডেভিটের কপি চাইবেন।
টাইমস অব আসাম পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের বৈদেশিক গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ বাংলাদেশের প্রথম আলো’র নয়াদিল্লি প্রতিনিধি দীপাঞ্জন রায় চৌধুরীকে ডেকে নিয়ে এই রিপোর্টটি তৈরি করতে বলে। এতে আরও বলা হয়, দীপাঞ্জনকে খালিজ টাইমস-এর ভারতীয় বংশোদ্ভূত মালিক এ কাজে প্ররোচিত করেন। মিথ্যা ওই সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পর বাংলাদেশের একটি বিশেষ পরিবারের আমেরিকা প্রবাসী সদস্য দিল্লি গিয়ে দীপাঞ্জন রায়কে ওই মিথ্যা রিপোর্টটির জন্য ধন্যবাদ জানান।
এছাড়া বাংলাদেশের প্রথম আলো পত্রিকাও প্রথম পাতার সিঙ্গেল কলামে প্রথম রিপোর্টটি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, বিএনপি ১৯৯১ সালে আইএসআই’র কাছ থেকে ৫ কোটি রুপি গ্রহণ করে। প্রথম আলো ওই বানোয়াট খবরটি উদ্দেশ্যমূলকভাবেই প্রকাশ করে। এর পরই শেখ হাসিনা অপপ্রচার চালানোর একটি হাতিয়ার পেয়ে যান।
মাহাবুবুর রহমান
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বিএনপিকে আইএসআই’র টাকা দেয়ার খবরটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। একইসঙ্গে আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানিও বলেছেন, এটি ভিত্তিহীন খবর। এর সঙ্গে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই। উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই অপপ্রচার করা হচ্ছে। পাকিস্তানের আদালতে আমি এ ধরনের কোনো সাক্ষ্য দিইনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা কয়েকদিন ধরে আইএসআই বিএনপিকে টাকা দিয়েছে বলে প্রচারণা চালায়। এ প্রচারণা যে একেবারেই বানোয়াট, তা পাকিস্তান সরকার বৃহস্পতিবার খোলাসা করল। আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক তার দেয়া আদালতের সাক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ ও বিএনপি’র কোনো প্রসঙ্গই ছিল না বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এ খবর সম্পূর্ণ কাল্পনিক। আমি আদালত কেন, অন্য কোথাও এ ধরনের কোনো কথা বলিনি। আমাকে কেউ এ ধরনের কথা জিজ্ঞাসাও করেনি।’ পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘বানোয়াট’ বলে প্রত্যাখ্যানও করেছে।
প্রসঙ্গত, দুবাইভিত্তিক খালিজ টাইমস ৩ মার্চ আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানির উদ্ধৃতি দিয়ে ১৯৯১ সালের নির্বাচনের আগে আইএসআই বিএনপিকে পাঁচ কোটি রুপি দিয়েছে বলে একটি রিপোর্ট ছাপে। এর পরদিন ৪ মার্চ একই রিপোর্ট ঢাকার দৈনিক প্রথম আলো ছাপে। পরে ডেইলি মেইলের ভারতীয় অনলাইন সংস্করণ, সাপ্তাহিক ইন্ডিয়া টুডে এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) একই রিপোর্ট প্রকাশ করে। রিপোর্টটি একই ব্যক্তি দীপাঞ্জন রায়ের করা।
ভারতীয় সাংবাদিক দীপাঞ্জন রায় ডেইলি মেইল ও ইন্ডিয়া টুডে-তে রিপোর্টটি করেন। দীপাঞ্জন রায় ঢাকার দৈনিক প্রথম আলো’র নয়াদিল্লি প্রতিনিধি। ইন্ডিয়া টুডে-তেও তিনি বাংলাদেশ বিষয়ে লেখেন। বাংলাদেশ সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন সংবাদ সংস্থা বাসস ভারতীয় সাপ্তাহিক ইন্ডিয়া টুডে’র ওই রিপোর্টটি হুবহু প্রচার করেছে। তবে এ বিষয়ে পাকিস্তানের কোনো পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি।
এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশের পর বাংলাদেশের সরকারি দল আওয়ামী লীগ ব্যাপক প্রচারণা শুরু করে। দলটির প্রধান ও সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রী-এমপিরা জাতীয় সংসদ এবং রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ‘আইএসআই’র টাকা নিয়ে ১৯৯১
সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছেন বলে অভিযোগ আনেন। বিরোধী দলের বিভিন্ন দাবি ও আন্দোলনের বিপরীতে এ ইস্যুটিকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন তারা। ২০ মার্চ জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের অন্যতম জোরই ছিল এ ইস্যুর ওপর।
এরই মধ্যে ২২ মার্চ বাংলা দৈনিক নয়া দিগন্ত ও ইংরেজি সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকায় আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানির সাক্ষাত্কার ছাপা হয়। পাকিস্তান থেকে মনির আহমেদ দৈনিক নয়া দিগন্ত-এ ও ঢাকা থেকে ফোনে আবদুর রহমান খান সাপ্তাহিক হলিডে’র পক্ষে সাক্ষাত্কার নেন। একইদিনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র আবদুল বাসিত ‘বিএনপিকে আইএসআইর অর্থ দেয়া’র খবরকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেন।
প্রতিবেদন ভিত্তিহীন—পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর : পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনকালে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই (ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স) বিএনপিকে অর্থ দিয়েছিল বলে প্রকাশিত খবরটি বানোয়াট। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র আবদুল বাসিত এ খবরকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এ ধরনের প্রতিবেদন শুধু ভিত্তিহীনই ছিল না, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ও পারস্পরিক কল্যাণকর সম্পর্ক নষ্ট করার হীন প্রয়াস এটি।
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করে থাকে এবং এ ধরনের মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও বানোয়াট কাহিনী বিশ্বাস করা ঠিক নয়।’ পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (.িসড়ভধ.মড়া.ঢ়শ) ওই মুখপাত্রের বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
সাক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রসঙ্গই ছিল না—দুররানি : আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানি এবং পাকিস্তানের মেহরান ব্যাংকের সাবেক প্রধান ইউনুস হাবিব বিএনপিকে অর্থ দেয়ার কথা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইসলামাবাদে নয়া দিগন্তে’র সাংবাদিক মনির আহমেদকে আসাদ দুররানি এবং ঢাকা থেকে ফোনে সাপ্তাহিক হলিডে’র সাংবাদিক আবদুর রহমান খানকে ইউনুস হাবিব এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনকে অসত্য বলে অভিহিত করেন।
২২ মার্চ হলিডে পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাত্কারে দুররানি বলেন, ‘পাকিস্তান সুপ্রিমকোর্টে আমার বক্তব্যে পাকিস্তানের বাইরের কোনো দলকে অর্থ দেয়ার কথা উল্লেখ নেই।’ তিনি বলেন, পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্টে তিনি এমন কিছুই বলেননি। তবে পাকিস্তানের বাইরের কিছু গণমাধ্যমে তার বরাত দিয়ে এমন বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশের খবর জানতে পেরে তিনি ব্যথিত। বিএনপিকে অর্থ দেয়ার খবরকে দুররানি ‘মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে মনগড়া’ সংবাদ বলে মন্তব্য করেন।
একইদিন ইসলামাবাদে মনির আহমেদকে দেয়া সাক্ষাত্কারে আইএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক আসাদ দুররানি ‘বিএনপিকে টাকা দেয়া’র প্রশ্নে বলেন, ‘এ ধরনের প্রতিবেদনের কথা আমিও শুনেছি। এ খবরের মধ্যে কোনো সত্যতা নেই। এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন প্রচারণা। এর সঙ্গে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই।’ খালিজ টাইমস-এ তার ভাষ্য প্রকাশের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলছি, আমি কোথাও এমন কোনো কথা বলিনি। আর খালিজ টাইমস-এর কোনো সাংবাদিক আমার সঙ্গে কখনও যোগাযোগও করেননি। তারা কী লিখেছেন, সেটা তাদের ব্যাপার। আমাকে কিছু জিজ্ঞেস না করেই তারা এই প্রতিবেদন ছেপেছে। তাদের ওই প্রতিবেদন অসত্য। তাছাড়া খবরটি পাকিস্তান থেকেও কারও লেখা নয়। বাইরে থেকে তারা গল্প রচনা করেছেন।’ ‘এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কি-না’ জানতে চাইলে আসাদ দুররানি বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা সরকারের সঙ্গে আইএসআই’র কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়নি। আমরা তা করতে যাব কেন? উদ্দেশ্যমূলক এই অপপ্রচার করা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য এটা হতে পারে—বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করা কিংবা এর পেছনে অন্য কোনো মতলবও থাকতে পারে। আমি আবারও বলছি, আমার বক্তব্যের কোথাও বাংলাদেশের কোনো কথা নেই। আদালতে কী বক্তব্য দেয়া হয়েছে, তার রেকর্ড তো সংরক্ষিত থাকে। কোর্টে কিছু বলা হলে সেটি সব মিডিয়ায় প্রকাশ হতো।’
অসত্য প্রতিবেদন যখন রাজনৈতিক হাতিয়ার : আইএসআই’র টাকা দেয়া সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের সরকারি দল ৪ মার্চ থেকেই রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার শুরু করে। প্রতিবেদনের সত্যাসত্য যাচাই না করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে এবং সংসদের বাইরে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন।
সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ২২ মার্চ আসাদ দুররানি ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করলে শেখ হাসিনা কিছুটা পিছু হটলেও তার দলের নেতাকর্মীরা এখনও মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি একধাপ এগিয়ে বলেছেন, তিনি পাকিস্তান সরকারের কাছে দুররানির এফিডেভিটের কপি চাইবেন।
টাইমস অব আসাম পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের বৈদেশিক গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ বাংলাদেশের প্রথম আলো’র নয়াদিল্লি প্রতিনিধি দীপাঞ্জন রায় চৌধুরীকে ডেকে নিয়ে এই রিপোর্টটি তৈরি করতে বলে। এতে আরও বলা হয়, দীপাঞ্জনকে খালিজ টাইমস-এর ভারতীয় বংশোদ্ভূত মালিক এ কাজে প্ররোচিত করেন। মিথ্যা ওই সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পর বাংলাদেশের একটি বিশেষ পরিবারের আমেরিকা প্রবাসী সদস্য দিল্লি গিয়ে দীপাঞ্জন রায়কে ওই মিথ্যা রিপোর্টটির জন্য ধন্যবাদ জানান।
এছাড়া বাংলাদেশের প্রথম আলো পত্রিকাও প্রথম পাতার সিঙ্গেল কলামে প্রথম রিপোর্টটি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, বিএনপি ১৯৯১ সালে আইএসআই’র কাছ থেকে ৫ কোটি রুপি গ্রহণ করে। প্রথম আলো ওই বানোয়াট খবরটি উদ্দেশ্যমূলকভাবেই প্রকাশ করে। এর পরই শেখ হাসিনা অপপ্রচার চালানোর একটি হাতিয়ার পেয়ে যান।
 

BANGLADESHI UPDATE NEWS Copyright © 2011 - |- Template created by O Pregador - |- Powered by Blogger Templates