‘সেই দরবেশের বিচার করতে হবে’
|
||||
|
![]() |
বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের এই নেতা সোমবার সংসদে বলেন, “গত বছর আমি এই সংসদে দাঁড়িয়ে এক দরবেশ ও তার মুরীদদের কথা বলেছিলাম। এবারের শেয়ার বাজারের অর্থ লুণ্ঠনের পর সেই দরবেশের কথা দেশের ছোট ছোট বাচ্চারাও জেনে গেছে।
“এই দরবেশের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। তাই সরকারকে বলব, এদের বিচার করতে রেক্টোসপেক্টিভ (ভূতপূর্ব) অ্যাফেক্ট (পুরনো ঘটনার বিচার পরে প্রণীত আইনে) দিয়ে সংসদে নতুন আইন প্রণয়ন করুন।’’
দীর্ঘদিন সংসদ বর্জন শেষে রোববার ফেরার পরদিন রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর বক্তব্য দিতে দাঁড়িয়ে এই কথা বলেন আন্দালিব।
গত এক বছর ধরে দেশের পুঁজিবাজারে উত্থান-পতন চলছে। এতে কারসাজির অভিযোগ উঠলে তার অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটিও করে সরকার। তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কিছু ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি পোষাতে কয়েকটি পদক্ষেপও নিয়েছে সরকার।
তবে তারপরও পুঁজিবাজারে স্থিতি না ফেরার কথা তুলে ধরে বিজেপি চেয়ারম্যান বলেন, “পুঁজিবাজার সচল করতে প্রধানমন্ত্রীও উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তারপরও বাজারে ব্যাংকের মালিকরা অর্থ বিনিয়োগ করেননি। অথচ তারা ব্রোকারেজ হাউজে অর্থ বিনিয়োগ করেছে।”
পুঁজিবাজার থেকে অর্থ লুট হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “আমার কাছে তালিকা আছে, আটটি কোম্পানি ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা এবং ২৬টি কোম্পানি ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা লুট করে করেছে।”
“অথচ আমাদের অর্থমন্ত্রী বলেছেন, শেয়ার বাজার আমি বুঝি না। অর্থ তিনি লুণ্ঠনকারীদের ‘মাফিয়া’ বললেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন না। এটা দুঃখজনক,” বলেন আন্দালিব।
অর্থমন্ত্রীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “তাকে ইন্দিরা গান্ধী অ্যাওয়ার্ডের বদলে পুঁজিবাজার ধ্বংসের জন্য ‘ধ্বংসাত্মক অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া উচিৎ।”
পুঁজিবাজার দিয়ে শুরু করে সংবিধান সংশোধন, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ খাত, গণমাধ্যম নিয়ে সরকারের সমালোচনার পর অবশ্য সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে জয়ের জন্য সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিজেপি চেয়ারম্যান।
বিদ্যৃুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে দাবি করে আন্দালিব বলেন, “সরকার তার পছন্দমত লোকজনকে দিয়ে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট বসিয়েছে। ফার্নিচার, চানাচুর কোম্পনিকে দিয়ে এই খাতকে কুইক ধ্বংস করা হচ্ছে।
“সামিট পরিবার হচ্ছে সরকারের কাছে ফুটবলের ম্যারাডোনা এবং ওরিয়ন কোম্পানি হচ্ছে ফুটবলের মেসি। এই দুই পরিবারকে তারা (সরকার) ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের দায়িত্ব দিয়েছে।”
দেশের অর্থনীতির ‘বিপর্যয়ের’ নতুন ব্যাংক অনুমোদনের প্রক্রিয়ারও সমালোচনা করেন আন্দালিব। তিনি বলেন, “এত দিন জানতাম আওয়ামী লীগ গরিবের সরকার, এখন দেখছি তারা ব্যাংকের সরকার।”
টেলিযোগাযোগ খাতে অব্যবস্থাপনা চলছে দাবি করে তার জন্য বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) দায়ী করেন তিনি।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের এই নেতা। গণমাধ্যমের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সবশেষে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমানার বিরোধের রায় দেশের পক্ষে আসায় সরকারের প্রশংসা করে আন্দালিক বলেন, “সমুদ্র বিজয়ের জন্য সরকার ও দেশবাসীকে আমি অভিনন্দন জানাই।”