0 কুৎসিত বক্তব্য নয়: উত্তপ্ত সংসদে স্পিকার

কুৎসিত বক্তব্য নয়: উত্তপ্ত সংসদে স্পিকার


Mon, Mar 19th, 2012 7:53 pm BdST
 
ঢাকা, মার্চ ১৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সংসদে সোমবার বিএনপির এক নারী সাংসদের বক্তব্যের পর স্পিকার বলেছেন, এত কুৎসিত বক্তব্য কোনো অবস্থাতেই হওয়া উচিত নয়।

তিনি বলেন, “সুন্দর ভাষায় কথা বলুন। এটা সরকার ও বিরোধী দল উভয়ের জন্যই লজ্জার।”

বিরোধী দলের সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ আসিফা আশরাফী পাপিয়ার বক্তব্যের পর এ কথা বলেন স্পিকার।

সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবে বক্তব্য রাখার সময় রোববারের মতোই পাপিয়ার বক্তব্যে অধিবেশন কক্ষ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

এক পর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে স্পিকার আবদুল হামিদকে
টেবিলে হাতুড়ি পিটিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে হয়।

পাপিয়ার ‘অশ্লীল ও আপত্তিকর শব্দ’ ব্যবহার সংসদের জন্য ‘লজ্জাজনক’ বলেও মন্তব্য করেন স্পিকার আবদুল হামিদ।

ঘটনাপ্রবাহের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

পাপিয়া প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে ‘অশ্লীল’ বক্তব্য দিলে স্পিকার তা এক্সপাঞ্জ করেন।

ধন্যবাদ প্রস্তাবে আলোচনায় তার জন্য সময় বরাদ্দ ছিল ১০ মিনিট। এ সময় পাপিয়ার বক্তব্যের জন্য স্পিকার একবার তার মাইক বন্ধ করে দেন।

পাপিয়া তার বক্তব্যের শুরুর দিকেই রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানকে ‘মেরুদন্ডহীন রাষ্ট্রপতি’ বলে মন্তব্য করেন। স্পিকার সঙ্গে সঙ্গে পাপিয়ার এই বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করেন।

এ সময় বিরোধী দলের সাংসদদের ওপরের সারিতে বসা আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদরা চিৎকার করে ‘অসত্য বক্তব্য, অসত্য বক্তব্য’, ‘চুপ কর, চুপ কর’ বলে চিৎকার করেন।

পাপিয়ার বক্তব্যের শেষে স্পিকার বলেন, “এ ধরণের বক্তব্য রাখা ঠিক নয়।”

বিরোধী দলের প্রধান হুইপের উদ্দেশে স্পিকার বলেন, “আমি আপনাকে বললাম, সিনিয়র সদস্যদের দেন। পরিবেশ ঠিক থাকুক। সুন্দর বক্তব্য পাবেন।”

“গঠনমূলক সমালোচনা করুন। দেশবাসী প্রশংসা করবে।”

বিএনপির আরেক সাংসদ রেহানা আক্তার রানু রোববার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে অসংসদীয় শব্দ ব্যবহার করেন যা স্পিকার এক্সপাঞ্জ করেন।

তার জবাবে ৩০০ বিধিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি রোববার বলেন, “যে ধরণের ভাষা সংসদে ব্যবহার হয়েছে- তা নিষিদ্ধ পল্লীতেও ব্যবহার হয় না।”

এর জবাবে পাপিয়া সোমবার বলেন, “যারা নিষিদ্ধ পল্লীর সদস্য, তারাই নিষিদ্ধ পল্লীর ভাষা বলতে পারে।”

পাপিয়ার বক্তব্যের পর স্পিকার বলেন, “আমি তো বলতে পারি না- এর তদন্ত হওয়া উচিত কার নিষিদ্ধ পল্লীর অভিজ্ঞতা আছে। সংসদ সদস্যরাই পারলে এর তদন্ত হতে পারে।”

এর আগে পাপিয়া প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে এইচএম এরশাদ, গোলম আযম ও সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদকে জড়িয়ে ‘অশালীন’ বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি মতিউর রহমান রেন্টুর বই থেকে উদ্ধৃত করে কিছু ‘আপত্তিকর’ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ মাতাল হওয়া এবং অবৈধ অস্ত্র রাখার কারণে আমেরিকায় পুলিশের হেফাজতে ছিলেন বলেও দাবি করেন পাপিয়া।

তার এসব বক্তব্যের সময় সংরক্ষিত নারী সাংসদ আসনের সাংসদ ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী এবং ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা হৈ চৈ করেন।

তারা বলতে থাকেন, “অসত্য বক্তব্য রাখবেন না। চুপ করুন।”

একইসঙ্গে সরকারি দলের সব সাংসদই চিৎকার করে ওঠেন। অনেকে পাপিয়ার মাইক বন্ধ করে দিতে স্পিকারের প্রতি দাবি জানান।

এক পর্যায়ে বাপ্পী ও ইন্দিরা যে সারিতে বসেন তার একেবারে শেষ মাথায় বসে থাকা বেবী মওদুদ উঠে দাঁড়িয়ে পাপিয়ার বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন।

সরকারী দলের হুইপ আ স ম ফিরোজ এবং বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক উঠে গিয়ে নারী সাংসদদের নিবৃত করেন।

এ সময় স্পিকার পাপিয়ার মাইক বন্ধ করে টেবিলে হাতুড়ি ঠুকে সবাইকে শান্ত হতে বলেন।

তিনি বলেন, “কোনো অশ্লীল বক্তব্য রাখবেন না।”

পাপিয়ার আগে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ নাজমা আক্তার বলেন, “সংসদে যে ভাষায় কথা বলা হচ্ছে- কোনো ভদ্রঘরের সন্তান এ ভাষায় কথা বলতে পারে না।”

এর আগে বিরোধী দলের সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ রাশেদা বেগম হীরা বলেন, “প্রশাসনে কিছু হিন্দু কর্মকর্তা বসিয়ে দলীয়করণ করে আর এরশাদকে গৃহপালিত বিরোধীদলীয় নেতা করে সরকার নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে।”
 

BANGLADESHI UPDATE NEWS Copyright © 2011 - |- Template created by O Pregador - |- Powered by Blogger Templates