0 সংসদে উত্তাপ : বিরোধী দলের অধিবেশনে যোগদান, কথা বলেননি দুই নেত্রী

সংসদে উত্তাপ : বিরোধী দলের অধিবেশনে যোগদান, কথা বলেননি দুই নেত্রী


সংসদে ফিরেই নানা ইস্যুতে উত্তাপ ছড়িয়েছে বিরোধী দল। যোগ দিয়েই রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর বিরোধীদলীয় সদস্যদের বক্তব্যের সূত্র ধরে সংসদ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনাকালে বিরোধীদলীয় নেতা থাকাকালে ‘শেখ হাসিনা গোলাম আযমের পা ছুঁয়ে সালাম করেছিলেন’ মর্মে বিরোধী দলের রেহানা আক্তার রানুর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সংসদে চিত্কার, চেঁচামেচি ও হইচই সৃষ্টি হয়। সরকারি ও বিরোধী দলের মহিলা এমপিদের মারমুখো ভূমিকার কারণে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। সরকারদলীয় এমপি ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পি ও বিএনপি দলীয় শাম্মী আক্তার পরস্পরের দিকে তেড়ে যান। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির উপক্রম হয়। সরকারি দলের বাপ্পি মাইক ছাড়াই হাত উঁচিতে ‘চুপ, থাপ্পড় মারবো’ ধরনের শব্দ উচ্চারণ করলে শাম্মী আক্তারও অনুরূপ অঙ্গভঙ্গি করে জবাব দেন। এতে কিছুক্ষণের জন্য সংসদ অচল হয়ে পড়ে। এ সময় সরকার ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপসহ বেশ ক’জন এমপি ঝগড়া থামান। পরে সে বক্তব্যের জের ধরে কথার লড়াই করেন সরকার ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ। সংসদে অশালীন বক্তব্যের অভিযোগ এনে জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল বিরোধীদলীয় সদস্য ও বিরোধীদলীয় নেতা সম্পর্কে মন্তব্য করলে পাল্টা জবাব দেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। পরে সরকারি দলের চিফ হুইপ আবদুস শহিদ সব অশালীন বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া সংসদে উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বিরোধী দল সংসদে যাওয়ার খবরে পুরো সচিবালয়ে ছিল টানটান উত্তেজনা। বিশেষ করে বিরোধীদলীয় নেতা ও চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের কার্যালয় ছিল সরগরম। সংসদের দর্শক ও সাংবাদিক গ্যালারিও ছিল পরিপূর্ণ।
স্পিকার আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে গতকাল সংসদের বৈঠক শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গতকাল বিকাল ৫টা ১২ মিনিটে চারদলীয় জোটের ৩৬ সদস্য সংসদে যোগ দিলে স্পিকার তাদের স্বাগত জানান। বিএনপির সঙ্গে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির অলি আহমদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির আন্দালিব রহমান পার্থ এবং জামায়াতে ইসলামীর এএএম শামসুল ইসলাম ও হামিদুর রহমান আযাদও অধিবেশনে যোগ দেন। বিরোধী দলের পাশাপাশি এলডিপির ড. অলি আহমদও গতকাল দীর্ঘদিন পর সংসদে যোগ দিয়েছেন। এলডিপি সম্প্রতি বিএনপি নেতৃত্বাধীন গঠিত ১৬ দলীয় গণতান্ত্রিক ঐক্যজোটের সদস্যভুক্ত হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধের মামলায় কারাবন্দি সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং সৌদি আরবে অবস্থানকারী মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ বৈঠকে অনুপস্থিত রয়েছেন। এদের দু’জনের মেয়াদই এরই মধ্যে ৯০ দিন উত্তীর্ণ হলেও তারা স্পিকারের বিশেষ অনুমতি নিয়ে সংসদের বাইরে রয়েছেন।
বৈঠকের শুরুতেই স্পিকার গুরুতর অসুস্থ কায়কোবাদের টানা ৯০ কার্যদিবস অনুপস্থিতির বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, কায়কোবাদের সংসদে টানা ৯০ দিন অনুপস্থিত পূর্ণ হয়েছে গত ৫ মার্চ। কিন্তু সংসদে উপস্থিত থাকতে না পেরে আমার কাছে ছুটির আবেদন জানিয়েছেন তিনি। বিষয়টি মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে স্পিকার তা ভোটে দিলে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এর আগে টানা ৭৪ কার্যদিবস সংসদে অনুপস্থিত থাকার পর গত বছরের পর ১৫ মার্চ সংসদে যোগ দেয় বিএনপি। এরপর খালেদা জিয়া আর সংসদে আসেননি। তবে দলের অধিকাংশ সংসদ সদস্য গত বছরের ২৪ মার্চ সর্বশেষ সংসদে আসেন। এর আগে গতকাল বিকালে খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বিএনপির সংসদীয় দলের বৈঠকে বিএনপির সংসদে ফেরার সিদ্ধান্ত হয়।
বিএনপি ৭৭ দিন পর সংসদ অধিবেশনে ফিরলেও দলের চেয়ারপার্সন সংসদে যোগ দিয়েছেন ৮৩ কর্মদিবস পর। বিএনপি সর্বশেষ গত বছরের ২৪ মার্চ সংসদে এসেছিল।
বিরোধী দলকে স্বাগত জানিয়ে স্পিকার আবদুল হামিদ বলেন, আমি বিরোধী দলকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমি আশা করব, আপনারা সংসদে থেকে পরবর্তী সব কার্যক্রমে অংশ নিয়ে সংসদকে কার্যকর ও প্রাণবন্ত করতে ভূমিকা রাখবেন।
এদিকে রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনাকালে বিরোধী দলের সদস্য শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী স্পিকারকে উদ্দেশ করে বলেন, আমরা এতদিন দাওয়াতের অপেক্ষা করেছি। চা খাওয়ার দাওয়াত পেলে আরও আগেই সংসদে আসতাম। জবাবে স্পিকার বলে ওঠেন, আমি দাওয়াত দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। আমার প্রতীক্ষার শেষ ছিল না। আপনারা এসেছেন, এজন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। আশা করি সংসদে থেকে আমাকে সহযোগিতা করবেন। এ প্রেক্ষিতে এ্যানী বলেন, মাননীয় স্পিকার, আপনার চেয়ারটা নিরপেক্ষ। পাইকারি দাওয়াতের পরিবর্তে নিরপেক্ষ দাওয়াত পেলে আরও আগেই আসতে পারতাম। বিরোধী দলের সংসদে ফেরার সময়ে গতকাল সংসদনেত্রী শেখ হাসিনাও সংসদে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ মার্চ থেকে সংসদ বর্জনকারী বিএনপি সংসদে যোগ দেয়ার পরিবেশ নেই বলে অভিযোগ করে আসছে। তবে তারা চলতি অধিবেশনে যোগ দেয়ার ইঙ্গিত আগেই দিয়ে আসছিল।
আইন অনুযায়ী টানা ৯০ দিন অনুপস্থিত থাকলে একজন সংসদ সদস্যের সদস্যপদ শূন্য হয়ে যায়। সংসদ সদস্যপদ টিকিয়ে রাখতে হলে তাই আর সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিরোধী দলকে অধিবেশনে ফিরতে হতো।
গতকাল সংসদে প্রশ্নোত্তরপর্ব টেবিলে উত্থাপনের পরপরই রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শুরু হয়। আলোচনার জন্য প্রথমেই ফ্লোর দেয়া হয় সরকারি দলের সদস্য আ.স.ম. ফিরোজকে। আ.স.ম. ফিরোজ তার আলোচনায় বলেন, দেশের উন্নয়নে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছেন। ২০০১ সালে নির্বাচনের পর যেভাবে অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে, আমরা ক্ষমতায় এসে সেভাবে অত্যাচার নির্যাতন করতে পারেনি। তিনি বলেন, গ্রামে চুরি নেই, ডাকাতি নেই, সন্ত্রাস নেই। কিন্তু টকশো যখন দেখি তখন মনে হয় বাংলাদেশে কিছু নেই।
বিএনপিকে জামায়াত এবং মৌলবাদ যেভাবে আঁকড়ে ধরেছে, তাতে তাদের অস্তিত্ব টানাপড়েনে পড়েছে। একটি কুচক্রি মহল বার বার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলে ক্ষমতা অন্যের হাতে তুলে দিতে চায়।
সরকারি দলের হুইপ তার বক্তব্যে বিরোধী দলের কঠোর সমালোচনা করেন।
ভারত ও আইএসআইর টাকা লেনদেনের তদন্ত দাবি এ্যানীর : বিরোধীদলীয় এমপি শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, আইএসআইর টাকা নিয়ে সম্প্রতি অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। কিন্তু পাকিস্তানের হাইকোর্টে দেয়া সে হলফনামায় বাংলাদেশ বা বিএনপি প্রসঙ্গে কোনো উল্লেখ নেই। বিষয়টি আরব আমিরাতের খালিজ টাইমসে প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি ওই সংবাদটি বিস্তারিত পড়ার জন্য সরকারি দলের এমপিদের প্রতি আহ্বান জানান। এ্যানী বলেন, বিএনপি কখনও টাকা দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। বরং বিশ্বখ্যাত ইকোনমিক টাইমসে প্রকাশ পেয়েছে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগই ভারতের কাছ থেকে বস্তা বস্তা টাকা নিয়েছে। জোটের শরিক দল বলেছে, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ ছাড়া ক্ষমতায় আসতে পারতো না। এমনকি আওয়ামী লীগ নেতারাই বলছেন, মন্ত্রীরা ডিজিএফআইর এজেন্ট। তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালে লং ড্রাইভে গিয়ে কে কত টাকা লেনদেন করেছিলেন, তা তত্কালীন মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বইয়ে উল্লেখ আছে। আইএসআইর টাকার লেনদেন প্রসঙ্গে এ্যানী বক্তব্য দেয়ার সময় সরকারদলীয় এমপিরা হৈচৈ শুরু করলে তিনি বলেন, আমরা আন্দোলনের ফসল মইন ইউ’র হাত ধরে এখানে আসিনি। মইন-ফখরুদ্দীনের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করেই সংসদে এসেছি। হতে পারি সংখ্যায় ৩৭ জন তবে আমরা বিরোধী দল। সে নির্বাচনে জনগণ আমাদের ৩৭ ভাগ ভোট দিয়েছিল। এ সংখ্যা তিন বছরের মাথায় কোথায় উন্নীত হয়েছে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে আপনারা টের পাচ্ছেন না। শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, আজ সরকারদলীয় মন্ত্রী-এমপিরা যে ভাষায় বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তা শুনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা মনে পড়ে। তিনি একটি প্রবন্ধে লিখেছিলেন, সময়টা আজ বড্ড ইতর হয়ে গেছে। তবে আমরা তার জবাব দিতে আসিনি, প্রতিবাদ জানাতে এসেছি। তিনি বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর প্রধানমন্ত্রীর মতো একটি দায়িত্বশীল পদ থেকে বক্তব্য এসেছে— সরকার কারও বেডরুম পাহারা দিতে পারে না। এর ক’দিন পর একজন বিদেশি কূটনীতিক খুন হয়েছেন রাস্তায়। এখনও তার হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা হয়নি। অথচ দেশবাসীর জানমাল পাহারা দেয়ার দায়িত্ব সরকারেরই। তিনি বলেন, গণমিছিলে আমার জেলায় পুলিশ গুলি করে দুই কর্মীকে হত্যা করেছে। আমাদের কি গণতান্ত্রিকভাবে তার প্রতিবাদের সুযোগ নেই? আমরা ১২ মার্চ শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ আয়োজন করলে সরকারের তরফ থেকে সবধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু জনগণ সেটা মানেনি। খালেদা জিয়া চাইলে লাগাতার কর্মসূচি দিতে পারতেন। তিনি তা না করে সরকারকে সময় দিয়ে গণতন্ত্রকে সম্মান দিয়েছেন। আমরা মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ, গণমিছিল, রোড মার্চসহ নানাভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে জনগণকে সম্পৃক্ত করেছি। জনগণ আমাদের ভরসা দিয়েছে। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনবর্হালের দাবি এখন বিএনপির নয়— জনগণের।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৌদি আরবের ভিসা পেলেন না কেন —ফারুক : মাগরিবের নামাজের বিরতির পর পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে মহাজোট সরকারের শরিক জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইনুদ্দীন খান বাদল বিরোধীদলীয় এমপিদের বিরুদ্ধে বক্তব্যে ভাষা ও সংসদীয় রীতিনীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন। তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পরপরই পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তার জবাব দেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি স্পিকারকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনার ডানদিক থেকে কটাক্ষ বন্ধ হলে বামদিকেও কটাক্ষ উচ্চারিত হবে না।
তিনি মইনুদ্দীন খান বাদল প্রসঙ্গে বলেন, তার কাছ থেকে শালীনতা শিখতে চাই না। জীবন সায়াহ্নে এসে আপনি একজন নবীন সদস্য। আপনার ইতিহাস বলতে চাই না। জাতি আপনার ইতিহাস জানে। উনি আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইন প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে বললেন। জিয়াউর রহমান ও তারেককে নিয়ে যখন অশালীন কথা বলা হয়েছে, তখন আপনি কোথায় ছিলেন? তিনি সীমান্তহত্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, ফেলানীর লাশ ঝোলা ও হাবিবকে লেংটা করার পর সংসদের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যখন বলেন, এগুলো চলতেই থাকবে। আমরা এর প্রতিবাদ করবই। তিনি বলেন, যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারেন না, আমাদের সমাবেশ বন্ধ করে দেন, তার পদত্যাগ করা উচিত। তিনি বলেন, এখানে শিখতে আসিনি। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, আপনি সৌদি আরব যেতে পারলেন না। আপনি দীপু মনি নন, দেশের মন্ত্রী। স্বাধীন দেশের পতাকা বহন করে সৌদি যেতে পারলেন না। আমাদের লজ্জা হয়। যে সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিসা পান না, সেই সরকারকে ঘৃণা করি। তিনি বলেন, প্যাকিং করে পাকিস্তান চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়। খালেদা জিয়াকে নয়, আপনাকে প্যাকিং করে ভারতে পাঠিয়ে দেয়া হবে। জনগণ প্রস্তুত হয়ে গেছে।
বিরোধী দলের বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা হোক —চিফ হুইপ : বিরোধীদলীয় চিফ হুইপের বক্তব্যের পরপরই পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য দেন সংসদের চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহিদ। তিনি বলেন, বিরোধী দলের এমপিরা পদরক্ষার জন্য সংসদে ফিরেছেন। আর ৮ কার্যদিবস সংসদে না এলে তাদের পদ শূন্য হতো। এখন তারা সে সুযোগ নিচ্ছেন। কিন্তু তারা যে ভাষায় কথা বলেছেন, তা সংসদীয় রীতিনীতির লঙ্ঘন। আমরা বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় কখনও স্পিকার আমাদের সে সুযোগ দেননি। মনে হয় যেন সভ্য দেশে নয়, আফ্রিকার জঙ্গলে বক্তব্য শুনছি। এসব বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা দরকার। তিনি স্পিকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিরোধী দলের পুরো বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করে দিন। জবাবে স্পিকার বলেন, সে শব্দগুলো তখনই এক্সপাঞ্জ করা হয়েছে।
এই বিতর্কের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৩০০ বিধিতে একটি বিবৃতি দিতে দাঁড়ান। বিষয়বস্তু ছিল, মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা মামলার রায় প্রসঙ্গে। কিন্তু তিনি আগের বক্তব্যের রেশ টেনে কথা বলা শুরু করেন। এ সময় স্পিকার তাকে বিবৃতি পড়ে শোনার জন্য বারবার আহ্বান জানালেও তিনি আগের প্রসঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেন।
দীপু মনি বলেন, আজ যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, সে ভাষা নিষিদ্ধ পল্লীতেও মানায় না। আজ তা এই সংসদে উচ্চারিত হয়েছে অবলীলাক্রমে। তিনি বলেন, আমি তিন দশক রাজনীতি করছি; কিন্তু সংসদে প্রথম এসেছি। আমি হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছি। এখানে অশালীন বক্তব্যকে টেবিল চাপড়ে উত্সাহিত করা হয়েছে। যারা সংসদ দূষিত করলেন, জনগণকে অপমানিত করলেন—এটা রাজনৈতিক পথ হতে পারে না। এটা ধ্বংসের পথ, মানুষ এই পথ মেনে নেবে না।
 

BANGLADESHI UPDATE NEWS Copyright © 2011 - |- Template created by O Pregador - |- Powered by Blogger Templates