0 রাজধানীতে ১৭ দিনে ৮ খুন, ৮ কোটি টাকার গহনা লুট




ঢাকা, ১৮ জানুয়ারি: নতুন বছরের শুরুতেই রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এ সময়ে আটটি খুন ও প্রায় আট কোটি টাকার স্বর্ণের গহনা লুটের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও পুলিশের ওপর হামলা ও অস্ত্র লুট, আধিপত্য বিস্তার এবং গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের দাবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।
 
গত ১৭ দিনে আট খুনের মধ্যে ১৬ জানুয়ারি রাতে রাজারবাগ এলাকা থেকে ২৫ বছর বয়সী অজ্ঞাত এক নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খিলগাঁওয়ে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত নৌকার মাঝি সাত দিন চিকিৎসা শেষে ১৫ জানুয়ারি মারা যান। অন্যদিকে তিন দিনের ব্যবধানে রাজধানীর বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে ১১ ও ১৩ জানুয়ারি দুই বন্ধুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। ১১ জানুয়ারি উত্তরা ক্যান্সার হাসপাতালের পাশ থেকে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। ৩ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউক্লিয়ার মেডিসিন আলট্রাসাউন্ড ভবনের তিনতলা সিড়িঘর থেকে শিশু ইসরাত জাহান রিয়া’র লাশ উদ্ধার হয়। একই দিন খিলগাঁওয়ে দোকানের ভেতর থেকে দুই শিশু ভাই-বোনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
 
এসব হত্যার মধ্যে শুধুমাত্র শিশু রিয়া হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় তার মা ও প্রেমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি হত্যার ঘটানায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি অজ্ঞাত লাশগুলোর পরিচয়ও শনাক্ত করতে পারেনি।
 
ওই ১৭ দিনে একাধিক স্বর্ণের দোকানে প্রায় এক হাজার ৩০০ ভরি স্বর্ণের গহনা ডাকাতি হয়। এরমধ্যে ১৩ জানুয়ারি পল্টন থানার কাছেই একটি স্বর্ণের দোকান থেকে এক হাজার ২৫০ ভরি স্বর্ণের গহনা ডাকাতি হয়। এ ঘটনায় একজন গ্রেফতার করা হলেও চার দিনেও কোনো স্বর্ণ উদ্ধার হয়নি।
 
অন্যদিকে রামপুরায় একটি স্বর্ণের দোকান থেকে ২০ ভরি স্বর্ণের গহনা ডাকাতি করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ডাকাতি হওয়া স্বর্ণও উদ্ধার হয়নি। ৫ জানুয়ারি বিজয়নগরে একটি বাড়িতে ৫৩ লাখ টাকা ডাকাতি ও ১৩ জানুয়ারি খিলগাঁওয়ে গাড়ির মেরামতের দোকানে দারোয়ানকে বেধে গাড়ির যন্ত্রাংশ লুটের ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি ১১ জানুয়ারি উত্তরায় চার লাখ ও গুলশানে ২০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এর একটি ঘটনায়ও স্বর্ণ-টাকা-মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
 
৩ জানুয়ারি তেজগাঁ শিল্পাঞ্চলের পেট্রোল পাম্প থেকে গাড়িচালকে কুপিয়ে গাড়ি ছিনিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
 
এ সময়ের মধ্যে রাজধানীতে ছাত্রলীগ-যুবলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ৫ জানুয়ারি সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে টোল আদায়কে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সঙ্গে বিরোধে এক যুবলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়। ১০ জানুয়ারি লালবাগে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের এক অনুসারীকে কোপায় যুবলীগের লোকজন। ১১ পল্লবীতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে গুলি ও বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের চারজন আহত হয়। ১৩ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ীতে ছাত্রলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে। ছিনতাইকারীদের গুলিতে আহত হওয়ার কথা জানানো হলেও জানা যায়, ছাত্রলীগের আভ্যন্তরিণ বিরোধে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়। ১৪ জানুয়ারি রাতে এলিফ্যান্ট রোডে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কোনো ঘটনাতেই পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এছাড়া কদমতলীতে ১৫ জানুয়ারি দিনে দুপুরে এক ডিশ ব্যবসায়ীকে গুলি করে সন্ত্রাসীরা।
 
নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা দিয়ে পুরো নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাচাই করা ঠিক নয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি তাদের।
 
এদিকে ১২ জানুয়ারি দৈনিক বাংলা মোড়ে জামায়াত-পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মতিঝিল থানার টহলরত ইন্সপেক্টর বাশারের অস্ত্র খোয়া যায়। ১৬ জানুয়ারি জুতার বাক্স থেকে পিস্তলটি উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করে পুলিশ।
 

BANGLADESHI UPDATE NEWS Copyright © 2011 - |- Template created by O Pregador - |- Powered by Blogger Templates