0 ভিওআইপির সঙ্গে জড়িত বিটিসিএল কর্মকর্তারাই

অবৈধ উপায়ে বিদেশি টেলিযোগাযোগ বা ভিওআইপির মাধ্যমে ২০৫ কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব ক্ষতি ও আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাঈদ খানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল সোমবার দুপুরে রমনা থানায় দুদকের উপপরিচালক এস এম সাহিদুর রহমান এবং দুই উপসহকারী পরিচালক মো. মুজিবুর রহমান ও মো. নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন বিটিসিএলের বর্তমান সদস্য (রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা) মোহাম্মদ তৌফিক, পরিচালক মাহবুবুর রহমান, টেলিটকের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ও বিটিসিএলের আন্তর্জাতিক শাখার সাবেক পরিচালক মাহফুজার রহমান, বিটিসিএলের বিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম আসাদুজ্জামান, সাবেক বিভাগীয় প্রকৌশলী (আইটিএস) মো. আবদুল হালিম।
এজাহারে বলা হয়েছে, বিটিসিএলের ওই সব কর্মকর্তা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রাইভেট ক্যারিয়ারের (যাঁদের মাধ্যমে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা হয়েছে) সঙ্গে যোগসাজশ করে ভিওআইপি করেছেন। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গত বছরের মার্চ পর্যন্ত ছয় মাসের ভিওআইপি নিয়ে অনুসন্ধানের প্রথম পর্যায়ে বিটিসিএলের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় শতাধিক বিদেশি ও স্থানীয় ক্যারিয়ারের অবৈধ সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এসব ক্যারিয়ারের মাধ্যমে বিদেশি কলগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করে। যদিও টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী, এসব বিদেশি কলের প্রতিটি সরকার অনুমোদিত ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে হয়। সে ক্ষেত্রে কলপ্রতি তিন সেন্টের রাজস্ব পায় সরকার। কিন্তু বেসরকারি আইজিডব্লিউকে ফাঁকি দিয়ে এবং বিটিসিএলের আইজিডব্লিউর অবৈধ ব্যবহার করে এসব বিদেশি কল বাংলাদেশের নেটওয়ার্কে প্রবেশ করাচ্ছেন অভিযুক্তরা।
প্রাইভেট ক্যারিয়ারগুলোর মধ্যে সোমবারের মামলায় আরও আসামি করা হয়েছে সিঙ্গাপুরের ডিজিটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউর রহমান, সিঙ্গাপুরের আই পাওয়ার কমিউনিকেশন লিমিটেডের পরিচালক মো. মাকসুদুল লতিফ এবং আই পাওয়ারের স্থানীয় এজেন্ট রাজটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসিবুল বাসার, আমেরিকার এরিস্টো কল সার্ভিসেস ইনকরপোরেশনের পরিচালক এস এম ইসতিয়াক আহমেদ, সিঙ্গাপুরের এনটিএস গ্লোবাল প্রাইভেট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল কাদির এবং স্থানীয় এজেন্ট মেসার্স আযান স্টোরের মহিউদ্দিন সিদ্দিক, ব্রিটেনের মেসার্স সিম্পল টেলিকমের পরিচালক মোহাম্মদ মেহেদী হাসান এবং স্থানীয় এজেন্ট মেসার্স এক্সেলেন্স ট্রেডের স্বত্বাধিকারী মহিউদ্দিন সিদ্দিক।
অনুসন্ধান দলের প্রধান ও দুদকের উপপরিচালক এস এম সাহিদুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, চলতি বছরের মে মাস থেকে অবৈধ ভিওআইপির বিরুদ্ধে তদন্ত করে আসছিল দুদক। অনুসন্ধানের প্রথম পর্যায়ে পাঁচটি প্রাইভেট ক্যারিয়ারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অবৈধ ভিওআইপির মাধ্যমে কত কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, চার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। তবে মাত্র ৩০ শতাংশ পাওয়া রেকর্ডের নথিপত্রের মাধ্যমে ২০৫ কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্য পাওয়া গেছে।
পাঁচ মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ডিজিটেক ৯৬ কোটি ৪১ লাখ ৯৯ হাজার ৪৬৪ টাকা, আই পাওয়ার ৪৪ কোটি ৯৬ লাখ ৯৪ হাজার ১৭৭ টাকা, এরিস্টো কল ১৫ কোটি ৫১ লাখ চার হাজার ১০৭ টাকা, এনটিএস গ্লোবাল ২৪ কোটি ৩৯ লাখ ৫৩ হাজার ৩২৮ টাকা এবং সিম্পল টেলিকম ২৩ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার ২৯২ টাকা আত্মসাৎ করেছে।
 

BANGLADESHI UPDATE NEWS Copyright © 2011 - |- Template created by O Pregador - |- Powered by Blogger Templates