বিএনপিকে আইএসআইর অর্থ দেওয়ার খবর বানোয়াট: পাকিস্তান
বিশেষ প্রতিনিধি
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইএসআই’র সাবেক প্রধান আসাদ দুররানি বিএনপিকে অর্থ দিয়েছিলেন মর্মে পাকিস্তান আদালতে হলফনামায় স্বীকার করেছেন মর্মে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছে তা ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর।
মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (www.mofa.gov.pk) এর মুখপাত্রের বরাত দিয়ে ২২ মার্চ বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেছেন, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে আইএসআই অর্থ দিয়েছে বলে সংস্থাটির সাবেক প্রধানের যে স্বীকারোক্তির কথা বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হয়েছে তা কেবল ভিত্তিহীনই নয়, দুই দেশের ভ্রাতৃপ্রতীম সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার অপপ্রয়াসও বটে।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান অন্যদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে অনড়। এমন মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও বানোয়াট খবরকে আমলে নেওয়া হবে অনভিপ্রেত।
এর আগে গত ১৬ মার্চ বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত-প্রচারিত খবরে বলা হয়, ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের আগে বিএনপিকে ৫ কোটি রুপি দেওয়ার কথা পাকিস্তান সুপ্রিমকোর্টে দেওয়া হলফনামায় উল্লেখ করেছেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই`র (ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স) সাবেক চিফ আসাদ দুররানি।
১৪ই মার্চ পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টে এ বিষয়ে আয়োজিত এক শুনানিতে তিনি এতথ্য জানান বলে খবরে উল্লেখ করা হয়।
পরদিন ১৫ মার্চ ব্রিটেনের ডেইলি মেইলের অনলাইন ইন্ডিয়া সংস্করণ মেইল অনলাইন ইন্ডিয়ার এক খবরে বলা হয়, ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকালে বিএনপিকে আইএসআই ৫০ কোটি রুপি দিয়েছিল বলে আইএসআই’র সাবেক প্রধান আসাদ দুররানি সুপ্রিম কোর্টে স্বীকার করেছেন।
কিন্তু এর আগে ৩ মার্চ খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে আইএসআইয়ের পক্ষ থেকে বিএনপিকে ৫০ মিলিয়ন অর্থাৎ ৫ কোটি রুপি দেওয়ার অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়।
প্রধান বিচারপতি ইফতেখার মোহাম্মদ চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চে পাকিস্তানের প্রবীণ রাজনীতিক এয়ার মার্শাল আসগর খানের দায়ের করা একটি পিটিশন শুনানির সময় আইএসআই’র সাবেক এই চিফ পাকিস্তানের ভেতরে ও বাইরে গোয়েন্দা সংস্থাটির তৎপরতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। তার দেওয়া তথ্যে উত্তর-পূর্ব ভারতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বিএনপিকে আনতে আইএসআই’র অর্থ বরাদ্দের কথা বেরিয়ে আসে।
পাকিস্তানের বর্ষীয়ান রাজনীতিক এয়ার মার্শাল আসগর খানের দায়ের করা একটি পিটিশন দীর্ঘ ২৩ বছর পর পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে শুনানির জন্য উঠলে পাকিস্তানের রাজনীতি কলুষিত করতে আইএসআইর তৎপরতা ও বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির সাথে আইএসআই`র গোপন যোগাযোগের তথ্য উঠে আসে। ১৯৯০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে বেনজির ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টিকে পরাজিত করতে ইসলামী জামহুরি ইত্তেহাদ-এর নেতৃত্বে অন্য মৌলবাদী সংগঠনগুলোকে একত্রিত করতে আইএসআই ১৪ কোটি রুপি বিলি করেছিল, এমনই একটি অভিযোগ এনেছিলেন এয়ার মার্শাল আসগর খান।
আদালতের বাইরেও এর আগে আইএসআই’র তৎপরতর কথা জানিয়েছিলেন আসাদ দুররানি।