![]() |
বুধবার আধ ঘণ্টা দেরিতে, বেলা সাড়ে ১১টায় লেনদেন শুরুর পর প্রথম পাঁচ মিনিটেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাধারণ সূচক কমে ১৭৮ পয়েন্ট। অবশ্য লেনদেন শুরু হওয়ার আগে থেকেই ডিএসইর সামনের রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু করে কয়েকশ’ বিনিয়োগকারী। পুঁজিবাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত লেনদেন বন্ধ রাখার দাবি জানান তারা।
বেলা ১১টার দিকে ডিএসই ভবন থেকে নেমে আসা কিছু তারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ফুটপাতের একটি বইয়ের দোকানেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ভাংচুর করা হয় ফুটপাতের কয়েকটি দোকান। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।
সকালে বিক্ষোভকারীরা ডিএসইর মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পাশের এনেক্স ভবন এবং উল্টোদিকের মধুমিতা ভবনের মূল ফটকেও তালা ঝোলানো হয়। আশপাশের বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজে বিনিয়োগকারীদের যেতে বাধা দেয় বিক্ষোভকারীরা। পৌনে ১২টার দিকে এক বিনিয়োগকারী এনেক্স ভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে তাকে মারধর করা হয়।
পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীকে ব্যর্থ আখ্যায়িত করে তার পদত্যাগের দাবিতে শ্লে¬াগান দেয় ডিএসইর সামনে জড়ো হওয়া বিনিয়োগকারীরা। এ সময় অনেকেই মাইক বক্তব্য রাখেন।
ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান উর রশীদ চৌধুরী বলেন, “এটা করপোরেট ম্যানুপুলেশন। তারা বিভিন্ন ভাবে শেয়ারের দাম কমানোর চেষ্টা করছে। তারা শেয়ার কম দামে কিনে নেওয়ার পর সূচক বাড়িয়ে দেবে।”
সকালে এসইসি চেয়ারম্যানের দেওয়া ব্যাখ্যা প্রত্যাখান করে ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম শাহাদাত উল্লাহ ফিরোজ বলেন, “যারা এই কথাগুলো তুলেছে, তাদের মুখ দিয়েই আমরা ব্যাখ্যাটা জানতে চাই।”
তিনি বলেন, এই পতনের জন্য আমরা সরকারকে দায়ী করছি। কারণ বাজার যখন ভালো হচ্ছিল, তখন সরকারের ভেতরে থাকা কিছু লোকজন ভুল বুঝিয়ে এনবিআরের প্রজ্ঞাপন জারি করিয়েছে।”
সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন সকালে এক প্রেস ব্রিফিং করার পর আধ ঘণ্টা দেরিতে বেলা সাড়ে ১১টায় লেনদেন শুরুর ঘোষণা দেয় ডিএসই কর্তৃপক্ষ।
এসইসি চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে বাধা দেওয়ার ব্যাপারে মন্ত্রী পরিষদে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বিক্ষোভকারীরা রাস্তা অবরোধ করে রাখায় বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে যান চলাচল বন্ধ থাকে। বৃহস্পতিবারও ডিএসইর সামনের রাস্তা অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে তারা।
শাপলা চত্বর থেকে দুই জন বিনিয়োগকারীকে পুলিশের গাড়িতে তুলতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে জানতে চাইলে পুলিশের এক কর্মকর্তা কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে খারাপ ব্যাবহার করেন। পরে উপস্থিত অন্যান্য সাংবাদিক প্রতিবাদ জানালে মনিরুজ্জামান নামের ওই কর্মকর্তা ক্ষমা চান।
মঙ্গলবার সকালে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের জরুরি বৈঠকের পর ‘পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে’ লেনদেন বন্ধ রাখার ঘোষণা হয়। ডিএসইর লেনদেন বন্ধ রাখার ঘোষণায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) লেনদেনও দুই মিনিট চলার পর বন্ধ করা হয়। ওই দুই মিনিটের লেনদেন বাতিল করে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবারও দেশের দ্ইু পুঁজিবাজারের সামনে বিক্ষোভ করে বিনিয়োগকারীরা।